নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের চরকালিকাপুর তাল্লুক গ্রামের ১৬ নং চরকালিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি মৌমাছির স্কুলে পরিণত হয়েছে। বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে পাল্লা দিয়ে প্রায় ৭০টি মৌমাছির চাকের কয়েক হাজার মৌমাছি পড়াশোনা করছে। দ্বোতলা বিদ্যালয়টির চারিদিক ঘিরে রয়েছে মৌমাছির বাসাগুলো। ছাত্র-ছাত্রীরা যখন ক্লাসে বসে পড়াশোনা করে তখন মৌমাছিও তাদের ক্লাস রুমের ভেতর প্রবেশ করছে এবং ঘোরাঘুরি করছে। ছাত্র-ছাত্রীরা যখন মাঠ দিয়ে খেলা করে তখন মৌমাছিকেও দেখা যায় মাঠের ভেতর দিয়ে ছোটাছুটি করতে। শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী এবং মৌমাছি যেন একই পরিবারের সদস্যদের মত অবস্থান করছে। ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা ও খেলাধুলায় কোন বাধা বা ক্ষতি করছে না মৌমাছিগুলো। বিদ্যালয়ের পুরো ভবনটির চারিদিকে বিপুল পরিমান মৌমাছি বাসা দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছে।
জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের চরকালিকাপুর তাল্লুক গ্রামে ১৯৪৫ সালে ১৬ নং চরকালিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের বর্তমান ভবনটি নির্মিত হয় ২০০২ সালে। নতুন এ ভবন নির্মিত হবার ৭/৮ বছর পর থেকে শীতের শুরুতে মাঝে মধ্যে কিছু মৌচাক বাসা তৈরী করতো এবং ৫/৬ মাস থাকার পর অন্যত্র চলে যেত। বিগত ৫ বছর ধরে বিদ্যালয়টিতে মৌচাকের বাসা তৈরী বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে বিদ্যালয়টির চারিদিকে প্রায় সত্তরটি মৌচাকের বাসা রয়েছে।
চরকালিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোত্তাকিন আহমেদ সোহেল বলেন, বিগত প্রায় পাঁচ বছর ধরে আমাদের বিদ্যালয়ের দ্বোতলা ভবনটির চারপাশে প্রচুর মৌমাছি বাসা তৈরী করেছে। এলাকায় অনেক কাঁচা-পাকা বাড়ী, গাছপালা রয়েছে যেখানে তেমন কোন মৌচাকের বাসা নেই। অথচ আমাদের বিদ্যালয়ের চারদিকে প্রচুর মৌচাক বাসা বেধেছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ মৌচাকের বাসা দেখতে আসে। মাঝে মধ্যে মৌচাকের বাসা থেকে মধু সংগ্রহ করে শিক্ষার্থীদের খেতে দেয়া হয়। আশপাশের এলাকার লোকজনও মধু খেয়ে থাকে। তবে কিছু দুষ্ট মানুষ আছে যারা রাতের আধারে মধু কেটে নিয়ে যায়। মৌচাকগুলো কোন শিক্ষক বা ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষতি করে না। বিদ্যালয়ে মৌচাক পড়ায় আমরা খুবই আনন্দিত।