ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ইমাম হোসেন

সবার সহযোগিতা বদলাবে চারপাশ

প্রকাশিত: ০৭:৩৭, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০

সবার সহযোগিতা বদলাবে চারপাশ

মানুষ এখন নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধার জন্য শহরমুখী। শহর কিংবা নগরে এসেই নানা ধরনের বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে মানুষ। ঢাকা পৃথিবীর অন্যতম মেগাসিটি হওয়াতে প্রতিনিয়ত মানুষের বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে ফুটওভার ব্রিজ, যততত্র সারা বছর রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িতে জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের সেরা পাঁচ দূষণনগরীর মধ্যে ঢাকাকে গণ্য করা হয়েছে। নগরে নিত্যদিনের কাজে একজন মানুষ যতটুকু ক্লান্ত হয়, তার থেকে আরও বেশি ক্লান্ত হয় চোখ-মুখসহ সারা শরীরে ধুলাবালি লাগার কারণে। এর থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সচেতন পথচারী, রিক্সাচালক, রাস্তার পাশের দোকানদার, নন-এসি গাড়ির ড্রাইভার মাস্ক ব্যবহার করা দরকার। ঢাকা শহরে প্রতিদিন গড়ে প্রায় তিন লাখ যান্ত্রিক যানবাহন চলাচল করে। এই ব্যাপকসংখ্যক গাড়ির মধ্যে নিম্নমানের ও ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। একই সঙ্গে বায়ুদূষণে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে। একটি দেশে সুষ্ঠু প্রাকৃতিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য ন্যূনপক্ষে ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা দরকার, তার বিপরীতে এ দেশে বনভূমি মাত্র ১৬ শতাংশ, বর্তমানে বন উজাড় করে মানুষ চাষাবাদ ও বসবাসের জন্য বাড়ি নির্মাণ করছে। প্রতিনিয়ত যে পরিমাণ গাছ কাটা হয়, সে অনুপাতে গাছ লাগানো হচ্ছে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান অনুযায়ী, নগরীতে মাথাপিছু ৯ বর্গমিটার সবুজ এলাকা থাকা প্রয়োজন। ঢাকাতে এর পরিমাণ অনেক কম। ১৯৯৫ সালে ঢাকার সবুজ অঞ্চল ছিল মোট আয়তনের ১২ শতাংশ, ২০১৫ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৮ শতাংশে। পরিবেশ অধিদফতরের প্রতিবেদন অনুযায়ী ঢাকার বায়ুদূষণের ৫৮ শতাংশের উৎস ইটভাঁটি। আর রাস্তা, মাটির ধুলা ও মোটরগাড়ির দূষণ মিলে ২৬ শতাংশ। রাস্তার পাশে ব্যক্তিগত, সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনায় যত ধরনের স্থাপনা নির্মাণ, সংস্কার ও মেরামত হচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোন নিয়ম মানা হচ্ছে না। যে যেভাবে পারছে রাস্তা দখল করে নির্মাণ সামগ্রীসহ খনন করা মাটি রাস্তার পাশে রাখছে। বালু, মাটি, ইটের গুঁড়া চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে, বাতাসে উড়ছে। ধুলাবালি উৎপত্তির প্রধান উৎস রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি একটি নিয়ম এর মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। যেখানেই নির্মাণকাজ, সেখানেই নির্মাণ সামগ্রী বিশেষত ইট, বালু, সিমেন্ট, নুড়িপাথর ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। সবার স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতা ছাড়া নগরপিতা ও সরকারের একার পক্ষে এ ধরনের ব্যাপক কর্মযজ্ঞে দ্রুত সাফল্য আশা দুষ্কর। মীরসরাই, চট্টগ্রাম থেকে
×