ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নারী টি২০ ক্রিকেট বিশ্বকাপ শুরু আজ

প্রকাশিত: ১০:৪৩, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

নারী টি২০ ক্রিকেট বিশ্বকাপ শুরু আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অস্ট্রেলিয়ায় নারী টি২০ ক্রিকেট বিশ্বকাপ আজ শুরু হচ্ছে। ১০টি দল দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে খেলবে। এ গ্রুপে রয়েছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, ভারত, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা। বি গ্রুপে খেলবে ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান ও থাইল্যান্ড। উদ্বোধনী ম্যাচে সিডনিতে আজ লড়াই করবে অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। খেলা শুরু হবে দুপুর ২টায়। ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপ মিশন শুরু হবে। এর আগে পাকিস্তানকে প্রস্তুতি ম্যাচে হারিয়ে দারুণ প্রস্তুতি সেরে নিয়েছে বাংলাদেশ। ব্রিসবেনে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানকে ৫ রানে হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের মূল লড়াইয়ে খেলতে নামার আগে সবদলই প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে। ২টি করে আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি ম্যাচ থাকে। বাংলাদেশেরও তাই থাকে। তবে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচটি ছিল থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে। ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়ে যায়। দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে নিজেদের ভালভাবেই ঝালিয়ে নিতে পেরেছে সালমাবাহিনী। টস জিতে আগে ব্যাটিং করে ৮ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১১৮ রান করে। ওপেনার মুরশিদা খাতুন (৪৩) ও ফারজানা হকের (২১) সঙ্গে রিতু মনি (১৪*) ও নিগার সুলতানা (১৩) দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারায় এমন স্কোর গড়া যায়। এরপরও যে রান হয় তা আশানুরূপ নয়। কারণ মূল লড়াইয়ে এমন রান করে জেতা কঠিন হয়ে পড়বে। বাকি ব্যাটাররা নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। শামিমা সুলতানা (১), সানজিদা ইসলাম (০), আয়েশা রহমান (২), রুমানা আহমেদ (৬), সোবহানা মুস্তারিরা (০) দলের জন্য কিছুই করতে পারেননি। জবাব দিতে নেমে ১৯.৪ ওভারে ১০৬ রান করতেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। জাহানারা আলমের (৪/২২) অসাধারণ বোলিংয়ের সঙ্গে খাদিজা তুল কুবরার (৩/১১) ঘূর্ণি জাদু যোগ হওয়াতেই কাত হয় পাকিস্তান। সালমা খাতুনও (২/২৮) বল হাতে নিজেকে তুলে ধরেন। প্রস্তুতি ম্যাচ। তাই হার-জিতের চেয়ে কতটা ভাল প্রস্তুতি নেয়া যায় সেদিকেই সবার লক্ষ্য থাকে। সব ব্যাটাররাই ব্যাটিং করার সুযোগ পান। সব বোলাররাও বোলিং করার সুযোগ পান। ১১ জনই সব করতে পারবেন এমন নয়। বাংলাদেশ দলের ১০ জন ব্যাটিং করেন। বোলিংয়ে আরও পাঁচজন যোগ হন। ১৫ সদস্যের দল টি২০ বিশ্বকাপ খেলতে যান। সবাই প্রস্তুতি ম্যাচটিতে অংশ নেন। বোলাররা নিজেদের দক্ষতা দেখান। কিন্তু ব্যাটারদের কাছ থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী নৈপুণ্য মিলেনি। বাংলাদেশ নারী টি২০ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সালমা খাতুনও বিষয়টি নিয়ে ভেবেছেন। ম্যাচশেষে তিনি ব্যাটিংয়ের দুর্বলতা দ্রুতই সারিয়ে ওঠার কথাও বলেছেন। তবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জেতায় যে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে, তাও মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এই জয় আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে। এখন আমরা বিশ্বকাপের শুরুটা ভাল করতে চাই।’ সঙ্গে ব্যাটিং নিয়ে বলেন, ‘আমরা আমাদের ব্যাটিং পারফর্মেন্সে খুশি হলেও বেশ কিছু দুর্বলতা চোখে পড়ছে। শেষ ৫ ওভারে ব্যাটিং ভাল হয়নি। রান তোলার হার খুবই কম ছিল।’ বোলাররা ভাল করে ম্যাচ জেতালেও সামান্য দুর্বলতা এখানেও লক্ষ্য করেছেন সালমা। বলেছেন, ‘বোলাররাও পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের শেষদিকে ইয়র্কারের ব্যবহার ঠিকমতো করতে পারেনি। এই জায়গাগুলোতে আমাদের কাজ করতে হবে। এ ম্যাচটি ছিল বিশ্বকাপের আগে নিজেদের নিয়ে নতুন করে ভাবার একটা বড় সুযোগ।’ নিজেদের শেষবারের মতো গড়ে তোলার সুযোগটি কাজেও লাগিয়েছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটাররা। এখন যে দুর্বলতা আছে তা দূর করা গেলেই ভাল ফল মিলতে পারে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের গ্রুপে (‘এ’ গ্রুপ) যতই স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ভারত ও শ্রীলঙ্কা থাকুক, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচের জয়টি মানসিকতাও চাঙ্গা করে তুলবে। বিশ্বকাপ খেলতে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল ৩ ফেব্রুয়ারি ব্রিসবেনে পৌঁছায়। সেখান থেকে গোল কোস্টে চলে যায়। বিশ্বকাপের আনুষ্ঠানিকতায় ঢোকার আগে গোল কোস্টেই নিজেদের প্রস্তুত করতে থাকেন সালমাবাহিনী। চলতে থাকে প্রস্তুতি। ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে আইসিসির তত্ত্বাবধানে চলে যায় দল। শুরু হয় প্রস্তুতি ম্যাচের লড়াই। যে লড়াইয়ে সাফল্যই মিলেছে। দেশ ছাড়ার আগে যে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা ভাল করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান তা বজায় থাকবে বলেও মনে হচ্ছে। আর তিনদিন পর পার্থে ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্বকাপের মূলপর্বের মিশন শুরু হবে বাংলাদেশের। এরপর এক এক করে ক্যানবেরায় ২৭ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়া, মেলবোর্নে ২৯ ফেব্রুয়ারি নিউজিল্যান্ড, একই মাঠে ২ মার্চ গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে লড়াই করবে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। এ দলগুলোর মধ্যে ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলা হয়নি। বাংলাদেশের সামনে অপরিচিত দলই অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। এ দুই দলের বিরুদ্ধে ম্যাচে কেমন করে বাংলাদেশ তা সময়ই বলবে। তবে ভারত ও শ্রীলঙ্কাকে হারানোর সুযোগ আছে। ২০১৮ সালের এশিয়া কাপেই যেমন পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাকে পেছনে ফেলে ফাইনালে খেলে ভারত। লীগপর্বে ভারতকে হারানোর পর ফাইনালেও ভারতকে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। প্রথমবারের মতো দেশের ক্রিকেটে এশিয়া কাপ জয়ের স্বাদ এনে দেয়। এবার টি২০ বিশ্বকাপেও তাই ভারতের সঙ্গে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর এবং অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে কাঁপিয়ে দেয়ার আশা নিয়েই খেলতে নামবে সালমাবাহিনী। তার আগে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ে বিশ্বকাপের মিশনে নামার আগে দারুণ প্রস্তুতি সেরে নিয়েছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল।
×