ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আত্মঘাতী গোলে পুলিশের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র

পয়েন্ট নষ্ট বসুন্ধরার

প্রকাশিত: ১০:৪৮, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

  পয়েন্ট নষ্ট বসুন্ধরার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথম ম্যাচে ঘাম জরানো জয়ে শুভ সূচনা করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে এসেই হোঁচট খেল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। বৃহস্পতিবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম ম্যাচে তারা পয়েন্ট খোয়ায়। এগিয়ে গিয়েও ১-১ গোলে ড্র করে বাংলাদেশ পুলিশ ফুটবল ক্লাব। প্রতিটি গোলই হয় খেলার দ্বিতীয়ার্ধে। গত ৩ জানুয়ারি এই ভেন্যুতেই দু’দল প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হয়েছিল। ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালের সেই ম্যাচে পুলিশকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল কিংসরা। প্রথমার্ধের শুরুতে উভয় দলই কিছুটা ধীর ও সতর্ক ভঙ্গিতে খেলা শুরু করে। তবে যতই সময় গড়ায় দু’দলই খেলার গতি বাড়াতে থাকে। প্রথমে পুলিশ দল, পরে বসুন্ধরা, আরও পরে উভয় দলই সমানতালে আক্রমণ করে খেলে। কিন্তু আসল কাজের কাজটি, অর্থাৎ কাক্সিক্ষত গোলের দেখাই পাচ্ছিল না। এই ম্যাচে বসুন্ধরার হয়ে অভিষেক ঘটে বহুল আলোচিত ফিনল্যান্ড প্রবাসী কাজী তারিক রায়হানের। তিনি মূলত রাইটব্যাক হলেও এই ম্যাচে তাকে কোচ অস্কার ব্রুজোন সেন্টারব্যাক পজিশনে খেলান। ৫৫ মিনিট। পুলিশের বক্সের বাঁ প্রান্ত থেকে বাঁ পায়ের গড়ানো ক্রস করেন কলিনড্রেস। বক্সের ভেতরে সেই বলে বাঁ পায়ের জোরালো গড়ানো শট নেন দেলমন্তে। সেই শট ঠিকমতো ধরতে পারেননি পুলিশের গোলরক্ষক সাইফুল ইসলাম খান। সুযোগটা কড়ায় গন্ডায় কাজে লাগান ফরোয়ার্ড তৌহিদুল আলম সবুজ। সাইফুল ঝাঁপিয়ে পড়ে বল নিজের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার আগেই সেই বল ডান পায়ের শটে জালে জড়িয়ে দেন। এগিয়ে যায় কিংসরা (১-০)। ৭০ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ নষ্ট করে বসুন্ধরা। বাঁ প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে পুলিশের বক্সে ঢুকে পড়েন কলিনড্রেস। তারপর বাঁ পায়ে তীব্র যে শটটি নেন তা পাঞ্চ করে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করে পুলিশের গোলরক্ষক সাইফুল। ৭৩ মিনিটে সমতায় ফেরে পুলিশ। ফরোয়ার্ড জমির উদ্দিনের থ্রু পাস ধরে বাঁ প্রান্ত নিয়ে বসুন্ধরার বক্সে ঢুকে পড়েন এমএস বাবলু। তিনি বাঁ পায়ের যে গড়ানো ক্রসটি করেন সেটা বসুন্ধরার সাইডপোস্টে লেগে ফিরে আসে। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি বসুন্ধরার। বরং তাদের ডিফেন্ডার নুরুল নাঈম ফয়সাল দলের জন্য সর্বনাশ ও আক্ষেপ ডেকে আনেন। কারণ ফিরতি বলটি তার গায়ে লেগে জালে ঢুকে যায় (১-১)। ৭৭ মিনিটে আবারও গোল পেতে পারতো পুলিশ। কিরগিজ ডিফেন্ডার আদের মামবেতালিয়েভের পাস থেকে বক্সের ভেতরে বল পেয়ে সিডনি রিভেরা জোরালো শট নেন। সেই বল বসুন্ধরা গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো পাঞ্চ করে ফিরিয়ে দেন। বাকি সময়টায় উভয় দলই পরস্পরের ওপ প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি ও গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল। কিন্তু কোন দলই গোলের সন্ধান পায়নি। শেষের কয়েক মিনিট, বিশেষ করে নব্বই মিনিটের পর সংযুক্তি সময়ে (৬ মিনিট) দু’দলই যেভাবে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণ করে খেলে তা ছিল যেমন উপভোগ্য, তেমনি ছিল শ্বাসরুদ্ধকর। রেফারি সোহরাব হোসেন খেলা শেষের বাঁশি বাজালে ওই স্কোরলাইন নিয়ে এবং পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়ে দুই দল। তবে মাঠ ছাড়ার সময় দুই দলের প্রতিক্রিয়া ছিল দুই রকম। এই ড্র যেন হারের মতোই ছিল বসুন্ধরার জন্য। আর ড্র করেও যেন জয়ের আতিশয্যে ফেটে পড়েছিল পুলিশের ফুটবলাররা। তারা যেন ‘নৈতিক জয়’ কুড়িয়ে নিয়েছে।
×