ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

একযুগেও মেলেনি জব্বার নগরের স্বীকৃতি

প্রকাশিত: ১০:৫৯, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

একযুগেও মেলেনি জব্বার নগরের স্বীকৃতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, গফরগাঁও, ২০ ফেব্রুয়ারি ॥ মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদের স্মৃতি রক্ষায় ২০০৮ সালে ১৯ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা আনোয়ারুল ইকবাল এবং ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন, ভাষা সৈনিক বেগম রওশন আরা ও ভাষা সৈনিক ডাঃ হালিমা খাতুন গফরগাঁওয়ের পাঁচুয়া গ্রামে ভাষা শহীদ আবদুল জব্বারের বাড়ির আঙ্গিনায় উদ্বোধন করেন। জব্বারের নামে গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। উদ্বোধনের সময় পাঁচুয়া গ্রামটি জব্বার নগর হিসেবে ঘোষণা করেন। কিন্তু ঘোষণার এক যুগ পার হলেও স্বীকৃতি মেলেনি জব্বার নগরের। ৪১৩৫টি বই নিয়ে যাত্রা শুরু করা গ্রন্থাগারে বারো বছরেও আর কোন বই যোগ হয়নি। এই জাদুঘরে নেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও রোজনামচা বইটি। জাদুঘরেও নেই ভাষা শহীদের কোন স্মৃতিচিহ্নহ্ন। নানা অব্যবস্থাপনায় দর্শনার্থী ও পাঠকদের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না এটি। এখানে নেই ইন্টারনেট সেবা। বছরের বেশির ভাগ সময়ই ফাঁকা পড়ে থাকে গ্রন্থাগারটি। ২১ ফেব্রুয়ারি সামনে রেখে চলে প্রশাসনের দৌড়ঝাঁপ। দেখা মিলে দর্শনার্থীদের এবং সাংবাদিকদের কর্মব্যস্ততা। স্থানীয় তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এখানে যদি শহীদের নামে বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ করা হয় তাহলে জব্বার নগর পরিপূর্ণতা পাবে। গ্রন্থাগারিক মোঃ কায়সারুজ্জামান জানান, জাদুঘরে ভাষা শহীদের স্মৃতি সংরক্ষণ এবং বইয়ের সংখ্যা বাড়ানো গেলে পাঠক-দর্শনার্থীদের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। ভাষা শহীদ আবদুল জব্বারের ছেলে মোঃ নুরুল ইসলাম বাদল মিয়া বলেন, ভাষা শহীদের নামে কলেজ কিংবা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করা হলে গ্রন্থাগারটির প্রাণ সঞ্চার হবে। ভাষা শহীদ আবদুল জব্বারের স্মৃতি গাথা নিদর্শনগুলো জাদুঘরে সংরক্ষণ এবং গ্রন্থাগারে তথ্যপ্রযুক্তি সুবিধা করার দাবি স্থানীয়দের। প্রতিদিনই দর্শনার্থী শূন্য থাকে গ্রন্থাগার ও জাদুঘর। সেই সঙ্গে ২০০৮ সালে ভাষা শহীদের গ্রামের নাম জব্বার নগর রাখা হলে ও এত দিনেও সরকারী গেজেট প্রকাশ করা হয়নি। রাওনা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাহাবুল আলম বলেন, ‘নাম পরিবর্তনের বিষয়ে আমরা এখনও কোন গেজেট পায়নি। যে কারণেই নাগরিকত্ব সনদে পাঁচুয়া গ্রামেই লেখা হচ্ছে’। তিনি আরও বলেন, দর্শনার্থী বাড়ানোর জন্য আমি আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি এবং গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরটি কেন্দ্র করে এলাকার মানুষ বিভিন্ন সেবামূলক সহায়তা পেয়ে থাকে। গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মাহবুব উর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা অবগত আছি কি করলে শহীদ আবদুল জব্বার গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরটি আরও পরিপূর্ণতা পায় সেই ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং দর্শনার্থী বাড়ানোর জন্য বিভিন্নভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি প্রসঙ্গে বলেন, আমি শহীদ জব্বার স্মৃতি জাদুঘরে গিয়ে বইটি পাইনি। গ্রন্থাগারককে বলেছি দুই একদিনের মধ্যে বইটি সংগ্রহ করার জন্য।
×