ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জিতেই বাজে সময়ের পরিবর্তন ঘটাতে চান মুমিনুল

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 জিতেই বাজে সময়ের পরিবর্তন ঘটাতে চান মুমিনুল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত বছর থেকে টেস্ট ক্রিকেটে বাজে সময় পার করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এ বছরের শুরু পর্যন্ত টানা ৬ টেস্টেই পরাজিত হয়েছে বাংলাদেশ দল যার মধ্যে ৫টিতেই ইনিংস ব্যবধানের লজ্জাজনক হার আছে। শুরুটা হয়েছিল জিম্বাবুইয়ের কাছে ২০১৮ সালে সিলেট টেস্টে পরাজয়ের মধ্য দিয়ে। সেখান থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২ টেস্টেই জয়ে ফেরার পথ পেয়েও দিক হারিয়েছে বাংলাদেশ দল। এবার সেই জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষেই জয় দিয়ে দলের খারাপ সময়ের পরিবর্তন আনতে চান অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভ। গত বছর মার্চে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামিল্টন টেস্টের প্রথম ইনিংসে তামিম ইকবাল শতক হাঁকান এবং দ্বিতীয় ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও সৌম্য সরকার। এরপর আর কোন বড় ইনিংস নেই। তবে আজ জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে একমাত্র টেস্টে ব্যাটসম্যানরা বড় ইনিংস খেলবেন এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন মুমিনুল। শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। নিউজিল্যান্ড সফর দিয়ে গত বছর টেস্ট অভিযান শুরু হয়েছিল বাংলাদেশ দলের। এর মধ্যে প্রথম টেস্টে হ্যামিল্টনে ৩টি সেঞ্চুরি এসেছিল বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের উইলো থেকে। প্রথম ইনিংসে তামিম ১২৬ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে সৌম্য ১৪৯ ও মাহমুদুল্লাহ ১৪৬ রান করেছিলেন। এরপর দলগতভাবেই তেমন বড় কোন ইনিংস দেখা যায়নি। সেখানে ব্যাটসম্যানদের লম্বা ইনিংস খেলার প্রশ্নই অবান্তর। হ্যামিল্টন টেস্টের পর টানা ৫ টেস্টের ১০ ইনিংসে অর্ধশতকের সংখ্যাই কম। অধিকাংশ ইনিংসে বিপর্যয়ের মুখে প্রতিরোধ গড়ে দুয়েকটি অর্ধশতকের দেখা পাওয়া গেছে। আজ জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে নামার আগে তাই ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা নিয়েই ছিল প্রশ্ন। অধিনায়ক মুমিনুল এ বিষয়ে বলেন, ‘সত্যি বলতে গেলে আমার কাছে মনে হয় এতগুলো ইনিংসে একটা ১০০ না থাকা মানে হয়তো আপনি নিচের দিকেই আছেন। আমার কাছে মনে হয় মানুষের মাঝে মাঝে একটু খারাপ সময় যায়। দল হিসেবে আমরা হয়তো খারাপ সময় পার করছি। ইনশাআল্লাহ আমরা এটা কাটিয়ে ওঠার জন্য কাজ করছি। খুব শীঘ্রই কথা দিচ্ছি, কথাই দিয়ে দিলাম আপনাকে। পুরো দলের কথাই বলছি, আমার কথা বলছি না। আমাদের দলের কেউ ১০০, ২২০ বা ৩০০ করবে কথা দিলাম যে কেউই হোক বা বড় ইনিংস খেলবে ইনশাআল্লাহ।’ মুমিনুলের এমন বক্তব্যের পর সফরকারী জিম্বাবুইয়েকে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা হাল্কাভাবে দেখছেন এমনটাই মনে হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু এই দলটিই সর্বশেষবার যখন বাংলাদেশে এসে টেস্ট সিরিজ খেলেছে, সিলেটে প্রথম ম্যাচে ১৫১ রানে হারিয়েছে স্বাগতিকদের। এ বিষয়ে মুমিনুল বলেন, ‘জিম্বাবুইয়ে আমাদের দেশে আসছে মানে খাটো করে দেখার কিছু নেই। কোন দলই কিন্তু খাটো না। সব দলই ভাল। আমি জিম্বাবুইয়েকে সবসময় ভাল দল হিসেবেই বিবেচনা করি।’ কিন্তু মুমিনুলের ব্যাখ্যা হচ্ছে, যেহেতু ঘরের মাটিতে খেলা এবং দেশের মাটিতে এমনকি ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মতো পরাশক্তিদের টেস্টে হারানোর সক্ষমতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ দল, তাই জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে জয় ছাড়া কিছুই ভাবছেন না তিনি। কারণ এই মুহূর্তে দলের বাজে সময় কাটিয়ে ওঠার জন্য একটি জয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মুমিনুল বলেন, ‘দেখেন প্রত্যেকটা সিরিজেই, ম্যাচেই যখন আমরা খেলতে নামি তখন আমরা কিন্তু জেতার জন্যই নামি। এটা জিম্বাবুইয়ে হোক, অস্ট্রেলিয়া হোক, যেই হোক। আর আপনি তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যখন খেলবেন চাপ তো একটু থাকবেই। মরিয়া হয়ে ভাল ক্রিকেট খেলার ভাবনা সবার। অনুশীলন সেশনেও গত ৩-৪/৫ দিন ধরে সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। আর এই ম্যাচটাও জেতার জন্যই নামব। অবশ্যই আশাবাদী, আশা না থাকলে তো হবে না। সঙ্গে বিশ্বাসও আছে।’ গত বছর নবেম্বরে ভারত সফরে দুই টেস্টের দলে হুট করেই আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় ছিলেন না সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। পাকিস্তানে চলতি মাসের শুরুতে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে ছিলেন না মুশফিকুর রহিম। এবার জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ফিরেছেন মুশফিক, তামিমও আছেন। কিন্তু নেই মাহমুদুল্লাহ। এ বিষয়ে মুমিনুল বলেন, ‘একটা দলে সিনিয়র ক্রিকেটার না থাকা মানে দুশ্চিন্তা থাকে। ওই হিসাবে চিন্তা করলে আমার কাছে মনে হয় মুশফিক ভাই আসছে, অধিনায়ক হিসেবে অনেক বেশি স্বস্তিদায়ক আমার জন্য। আমার আত্মবিশ্বাস বাড়ছে। আমার কাছে মনে হয় দলের যখন একটা ভাল সামঞ্জস্য চলে আসবে, ধরেন দলে যদি ৬ জন স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হবে বা ৭টা স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হবে তখন আস্তে আস্তে সব পরিবর্তন হয়ে যাবে। আমি (অধিনায়কত্ব) উপভোগ করছি। যেহেতু আমাকে এ রকম কিছু বলে নাই, স্বল্প মেয়াদী নাকি দীর্ঘ মেয়াদী। মানিয়ে নিচ্ছি সমস্যা হচ্ছে না।’
×