ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

যে কোন পরিস্থিতি সামলাতে প্রত্যয়ী ডোমিঙ্গো

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

  যে কোন পরিস্থিতি সামলাতে প্রত্যয়ী ডোমিঙ্গো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব নেয়ার পর সপ্তম মাস কাটছে রাসেল ডোমিঙ্গোর। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের ক্রিকেট সম্পর্কে অনেক ধারণাই হয়েছে তার। দল পরিচালানার ক্ষেত্রে, দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে নানাবিধ যুক্তি, তর্ক, আলোচনা-সমালোচনার বিষয়গুলো মোকাবেলা করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ হিসেবেও। তাই বাংলাদেশে এসে এই অভিজ্ঞতাগুলো তার কাছে নতুন নয়। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে আজ একমাত্র টেস্টে দল নিয়ে নামার আগে তাই সব পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দিতে হয় তা জানা আছে বলে দাবি করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় শান্ত থেকে তা কাটিয়ে ওঠার জন্য দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ডোমিঙ্গো। আজ জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে দুইজন পেসার নিয়ে একাদশ সাজানোর কথাও জানিয়েছেন তিনি। কারণ এতেই টেস্ট দল হিসেবে যে কোন পরিবেশে উন্নতি করা সম্ভব বলে মনে করছেন ডোমিঙ্গো। টেস্টে উন্নতির জন্য আরও কিছু নিজস্ব পর্যবেক্ষণ জানিয়েছেন তিনি শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে। সাম্প্রতিক সময়ে টেস্ট ক্রিকেটে কঠিন সময় পার করছে বাংলাদেশ দল। ডোমিঙ্গো দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে তিনি দেখতে পেয়েছেন ভাল করার ক্ষেত্রে কোন চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে। সেক্ষেত্রে উন্নতি করার কিছু উপায়ও বের করে ফেলেছেন ডোমিঙ্গো। তিনি বলেন, ‘টেস্টে বাংলাদেশের উন্নতির জন্য আমরা সবসময়ই ঘূর্ণি বোলারদের নিয়ে এগোতে পারব না। আমরা একজন সিমার নিলাম এবং তারপর ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা অস্ট্রেলিয়া গেলাম, তখন বুঝতেই পারব না কোন তিনজন সিমার আমরা খেলাব। কারণ আমরা তো তাদের কোন উইকেটে খেলাইনি। এটা (দুই সিমার) ভাল সমন্বয়। যখন আপনি নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলের বিপক্ষে খেলবেন তখন নির্দিষ্টভাবেই আমরা জানি যে আমাদের দলের মূলশক্তি হচ্ছে স্পিনিং উইকেটে খেলা। আপনাকে তখন চাইতে হবে যাতে উইকেটে স্পিন হয়। কিন্তু আমাদের অবশ্যই ভাল উইকেটগুলোয় খেলা শিখতে হবে, যেন আমাদের সিমাররাও খেলায় ভালভাবে নিজেদের অবস্থানটা নিশ্চিত করতে পারে। আমরা যদি কঠিন উইকেটে খেলি তখন ব্যাটসম্যানরা বড় শতকগুলো পাবে না। এটা বোলারদেরও একটি ভ্রান্ত ধারণা দিয়ে দেয় যে, তারা অনেক বড় মাপের বোলার কারণ উইকেটে অনেক স্পিন হচ্ছে। এটা দলের জন্য ভালভাবে গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে কঠিন। আমাদের অবশ্যই ভাল উইকেটে খেলতে হবে যেন আমরা শুধু বাংলাদেশেই না বাইরেও নিজেদের খেলার উন্নতি করতে পারি।’ এসব কারণেই ভাল স্পোর্টিং উইকেটে খেলতে আগ্রহী ডোমিঙ্গো। কারণ তাতে করে দলের সবাই নিজ নিজ দায়িত্বগুলো সম্পর্কে সচেতন হতে পারবে। তিনি বলেন, ‘আমি ভাল ক্রিকেট উইকেট চাই। আমি চাই সিমাররা প্রথমদিন ভাল বোলিংয়ের সক্ষমতা দেখাক এবং স্পিনাররা তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চমদিনে জ¦লে উঠুক। সার্বিকভাবে দলের উন্নতির জন্য আমাদের অবশ্যই আরও বড় পরিসরের চিন্তাটা মনে রাখতে হবে। আমি ইংল্যান্ড কিংবা অস্ট্রেলিয়ার মতো জায়গা থেকে আসিনি যেখানে আপনি যা করতে চাইবেন সেটাই পারবেন। আমি এসেছি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। সেখানে সবকিছুই কঠিন। নির্বাচন করা সেখানে সহজ নয়। সেখানকার মানুষের মধ্যে অনেক মতভেদ আছে বিভিন্ন বিষয়ে। আমার জন্য জরুরী বিষয় হচ্ছে, খেলোয়াড় ও অধিনায়ককে এসব থেকে দূরে রাখা। আমাকে অবশ্যই এ দুয়ের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে থাকতে হবে। এটা অনেক বড় দায়িত্ব, কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা আগেই আমি এটা করেছি। অনেক সমস্যা, চ্যালেঞ্জ ছিল তাই এসব আমার কাছে ভিন্ন কিছু নয়।’ বরাবরই দেখা গেছে বাংলাদেশের মাটিতে জিম্বাবুইয়ে স্পিনারদের কাছেই ধরাশায়ী হয়েছে। এ জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেশের মাটিতে একাদশে একজন পেসার নিয়ে খেলেছে বাংলাদেশ দল। এমনকি কোন পেসারই খেলেননি গত বছর আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে। কিন্তু এবার দুই পেসার নিয়ে নামতে চান ডোমিঙ্গো, ‘আমরা হয়তো দুইজন সিমার নিয়ে নামব। আমার মনে হয় না শুধু একজন সিমার নিয়ে খেলাটা আমাদের দলের জন্য কোন সুফল বয়ে আনে। তিনজন সিমারই বেশি ভাল হতে পারে, যদি আমাদের একটা ছেলে থাকে যে ৭ নম্বরে ভাল ব্যাট করতে সক্ষম। ৭ নম্বরে ব্যাট করতে সক্ষম এবং দিনে ১০/১৫ ওভার ফাস্ট বোলিং করতে পারে সাইফউদ্দিন ফিট না হওয়া পর্যন্ত কিংবা সেই ছেলেটিকে খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের দুইজন সিমার নিয়েই নামতে হবে।’ জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বাদ পড়েছেন টেস্ট দল থেকে। বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান ফিরলেও তিনি খেলবেন না জানিয়েই দিয়েছেন ডোমিঙ্গো। তাকে দলে রাখা হয়েছে নতুন বোলিং কোচ ওটিস গিবসনের সঙ্গে থেকে নিজের উন্নতি করার জন্য। আর রিয়াদের ভবিষ্যত ভাবনা তার ওপরে ছেড়ে দিলেও তাকে স্বল্প পরিসরের ক্রিকেটে সবসময়ই চান ডোমিঙ্গো। এতকিছুর পরও জয় পাওয়াটাই ডোমিঙ্গোর কাছে সবচেয়ে বড় গুরুত্ব পাচ্ছে। কিন্তু তিনি চান নিয়মিত খেলা ক্রিকেটারদের মধ্যে টেস্ট সংস্কৃতির উন্নতি ঘটানো জরুরীভাবে দেখা হোক। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এই টেস্টে অন্য যে কোনটার চেয়ে কোচ হিসেবে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামছি, কারণ আমরা এক সঙ্গে ৪/৫ দিন থাকতে পেরেছি। আমি এখনও এমন কোন টেস্ট পাইনি যেখানে এক সঙ্গে গিয়েছি, একদিন ভালভাবে অনুশীলন করে তারপর টেস্ট খেলেছি। কোন টেস্ট নিয়ে গুরুত্ব দেয়া দলই এভাবে সূচী করে না এবং আমাদের এটার পরিবর্তন আনতে হবে।’
×