ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বেনাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে দুই বাংলার ভাষাপ্রেমীদের মিলনমেলা

প্রকাশিত: ০৯:৪৭, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 বেনাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে দুই বাংলার ভাষাপ্রেমীদের মিলনমেলা

স্টাফ রিপোর্টার, বেনাপোল ॥ ‘২১ ফেব্রুয়ারি আমার আলো আমার চোখ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে শুক্রবার বেনাপোলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিনব্যাপী আয়োজন। এ আয়োজনকে ঘিরে মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশের বেনাপোলে ও ভারতের পেট্রাপোল। শুধু তাই নয় সীমান্তের শূন্য রেখায় নির্মিত শহীদ মিনারে এক সঙ্গে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করলেন দুই দেশের মন্ত্রী, রাজনীতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গ। একে অপরকে উপহার দিলেন-মিষ্টিমুখ করালেন। ২০০২ সাল থেকে বেনাপোলে শুরু হয় ভাষা দিবসে দুই বাংলার মিলনমেলা। প্রথম দিকে শুধু ফুল বিনিময় করে আত্মার মিলন প্রদর্শন করতেন এক ভাষার দুই দেশের মানুষ। ক্রমশ এর কলেবর বৃদ্ধি পায়। ২০০৭ সাল থেকে সীমান্তের শূন্য রেখায় নির্মান করা হয় অস্থায়ী শহীদ মিনার। বাংলাদেশের বেনাপোলে ও ভারতের পেট্রাপোলে নির্মাণ করা হয় অনুষ্ঠান মঞ্চ। শহীদ মিনারে দুই বাংলার মানুষ এক সঙ্গে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের পর একে অপরকে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে যান নিজ নিজ দেশের অনুষ্ঠানস্থলে। এ বছর মিলনমেলায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী জ্যোতি প্রিয় মল্লিক, বাংলাদেশের যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, বনগাঁ পৌরসভার পৌরপিতা শঙ্কর আঢ্য, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম। মিলনমেলায় দুই দেশের মন্ত্রীই সীমান্তের কাঁটা তার উঠিয়ে দেয়ার দাবি করেন। মিলনমেলায় আবেগে আপ্লুত হয়ে ওঠেন দুই দেশের মানুষ। ভাষার মিলনকে আরও সুদৃঢ় করার কথা বললেন সীমান্তের শূন্য রেখায় নির্মিত শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসা পশ্চিমবঙ্গের বাঙালীরা। ভাষার এমন মিলন বাংলাদেশ ও ভারতের সম্প্রীতি আরও দৃঢ় ও বাংলা ভাষার মর্যাদা সমৃদ্ধ করবে এমনটাই মনে করেন দুই দেশের বাংলা ভাষাভাষী মানুষ। এদিন বেলা ১১টায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী শ্রী জ্যোতি প্রিয় মল্লিক ও বনগাঁ পৌর মেয়র শঙ্কর আঢ্য, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মেন্টর জেলা পরিষদের গোপাল শেঠ, দমদম পৌরসভার সিআইসি শ্রীমতি রিঙ্কু দে দত্তের নেতৃত্বে ভারত থেকে আসা বাংলা ভাষীরা বাংলাদেশীদের ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে ও মিষ্টি দিয়ে বরণ করে নেয় একে অপরকে। বাংলাদেশের পক্ষে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্রাচার্য্য, যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ শেখ আফিল উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুলক কুমার মন্ডল, সহকারী পুলিশ সুপার (নাভারন সার্কেল) জুয়েল ইমরান, একুশ উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম মঞ্জু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও একুশ উদ্যাপন পরিষদের সদস্য সচিব নূরুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এদিকে এ দিবস উপলক্ষে দুদেশের জাতীয় পতাকা, নানা রঙের ফেস্টুন, ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, আর ফুল দিয়ে বর্নিল সাজে সাজানো হয় সীমান্তের দু’পাশ। এবার একুশে মঞ্চে সাত গুণীকে মৈত্রী পদক প্রদান করা হয়। পদক প্রাপ্তরা হলেন সাংবাদিক ফখরে আলম, পশ্চিমবঙ্গের কবি মুক্তি বসু, সমাজসেবক কার্ত্তিক দত্ত, বাংলাদেশের রাজনীতিক আজগর আলী মিঞা, রাজনীতিক মিনহাজ উদ্দিন, শিক্ষাবিদ শান্তিপদ বিশ্বাস ও বৃক্ষপ্রেমী আব্দুল ওয়াহেদ সর্দার।
×