ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দ্বিতীয়দিন শেষে ভাল অবস্থানে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১০:৩৯, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

  দ্বিতীয়দিন শেষে ভাল অবস্থানে  বাংলাদেশ

মিথুন আশরাফ ॥ বাংলাদেশ-জিম্বাবুইয়ে একমাত্র টেস্টের প্রথমদিন বাংলাদেশকে ভালই ভুগিয়েছিলেন জিম্বাবুইয়ে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। কিন্তু নাঈম হাসানের অসাধারণ স্পিন জাদুতে ভোগান্তি কমে। প্রথমদিনটিতে বাংলাদেশের দাপটের সঙ্গে দাপট জিম্বাবুইয়েও দেখায়। কিন্তু দ্বিতীয়দিন একচ্ছত্র আধিপত্য দেখায় বাংলাদেশ। মুমিনুল হকের অপরাজিত ৭৯ ও নাজমুল হোসেন শান্তর ৭১ রানে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে প্রথম ইনিংসে ২৫ রানে পিছিয়ে থাকলেও চালকের আসনে বাংলাদেশই আছে। হাতে যে এখনও ৭ উইকেট আছে। দ্বিতীয়দিন শুরুতেই আবু জায়েদ রাহীর তোপে পড়ে জিম্বাবুইয়ে। সঙ্গে তাইজুল ইসলাম স্পিন জাদু দেখালে প্রথমদিনের ২২৮ রানের সঙ্গে আর ৩৭ রান যোগ করতে পারে সফরকারীরা। শেষ পর্যন্ত হাতে থাকা ৪ উইকেটে ২৬৫ রান করতে পারে। যেমনটি প্রথমদিনেই ভাবা হচ্ছিল দ্বিতীয়দিনের শুরুতেই কাত হয়ে যাবে জিম্বাবুইয়ে। তেমনই হয়েছে। প্রথম সেশন শেষ হওয়ার পৌনে এক ঘণ্টা আগেই অলআউট হয়ে যায় জিম্বাবুইয়ে। রাগিস চাকাভা (৩০) চেষ্টা করেন। কিন্তু দ্বিতীয়দিন ২ উইকেট করে নেয়া রাহী ও তাইজুলের বোলিং তোপে বাকিরা কুলিয়ে উঠতে পারেননি। জিম্বাবুইয়ের প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট শিকার করেন রাহী। দ্বিতীয়দিন ১৬.৩ ওভারের বেশ ব্যাটিংও করতে পারেনি তারা। জিম্বাবুইয়ে যেভাবে ব্যাটিং করেছে, বিশেষ করে ১০৭ রান করা আরভিন যেভাবে উইকেট আঁকড়ে থেকে রান তুলতে পেরেছেন, তেমন করা গেলেই স্কোরবোর্ডে রান জমা হবে। তা জানাই ছিল। বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শুরুতে তামিম ইকবাল (৪১) বড় স্কোর করার সম্ভাবনা জাগান। পারেননি। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত (৭১) সেঞ্চুরির আশা জাগান। তিনিও পারেননি। তবে এখন মুমিনুলের সঙ্গে মুশফিকুর রহিম (৩২*) বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহের দিকেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে দল দ্বিতীয়দিন শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ২৪০ রান করে ফেলেছে। আজ একমাত্র টেস্টের তৃতীয়দিনে মুমিনুল ও মুশফিক নিজেদের অবিচ্ছিন্ন ৬৮ রানের জুটিকে আরও বড় করতেই ব্যাট হাতে নামবেন। তা করতে পারলে এবং এরপর মিঠুন, লিটনও ভাল ব্যাটিং করতে পারলে জিম্বাবুইয়ের খবর আছে। জিম্বাবুইয়েকে এই টেস্টে হারাতে হলে আগে ২৬৫ রান অতিক্রম করে আরও কম করে হলেও প্রথম ইনিংসে ১০০ থেকে ১৫০ রানে এগিয়ে থাকা দরকার। বাংলাদেশ দল সেই পথে হাঁটছেও। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নেমেও প্রথম ইনিংসে সাইফ হাসান (৮) খুব বেশিদূর যেতে পারেননি। তামিম ইকবাল সম্ভাবনা জাগিয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৩৫ রানে একবার আউট থেকে বেঁচেও ৪১ রানের বেশি করতে পারেননি। দলের ১৮ রানে সাইফকে হারানোর পর ৯৬ রানে গিয়ে তামিমকেও হারায় বাংলাদেশ। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক মিলে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন। দুইজন মিলে দলকে খুব সহজেই ১৫০ রানে নিয়ে যান। ২০০ রানও এই দুইজন ব্যাটিংয়ে থাকতেই হবে। এমনই মনে করা হয়। এর মধ্যে শান্ত টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরিও করে ফেলেন। সেঞ্চুরির দিকেই এগিয়ে যেতে থাকেন। দ্বিতীয়দিনেই শান্তর মাধ্যমে বাংলাদেশের একটি সেঞ্চুরির দেখা মিলবে এমনই ধারণা করা হয়। কিন্তু দলের যখন ১৭২ রান হয় তখনই চার্লটন টিসুমার অফ স্টাম্পের বাইরের বলটি খেলতে গিয়েই ক্যাচ আউট হয়ে যান শান্ত। ১৩৯ বলে ৭ চারে ৭১ রান করেন। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করার সুযোগ ধরা দিয়েছিল। কিন্তু পারেননি শান্ত। এরপরও যা করেছেন তাতেই দলের ভিত মজবুত হয়ে যায়। শান্ত আউটের পর অধিনায়ক মুমিনুল হাল ধরেন। ৭৮ বলে হাফ সেঞ্চুরিও করে ফেলেন মুমিনুল। দলের রানও ২০০ হয়। আবার টেস্ট খেলতে নামা মুশফিককে নিয়ে এগিয়ে যান মুমিনুল। প্রতি সেশনেই একটি করে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে শেষদিকে মুমিনুল ও মুশফিক মিলে সহজেই ব্যাটিং করে যান। ১২০ বলে ৯ চারে অপরাজিত ৭৯ রান করেন মুমিনুল। তার সঙ্গে মুশফিক ৬৮ বলে ৬ চারে অপরাজিত ৩২ রান করেন। দুইজন দলের সেরা ব্যাটসম্যান। এই ব্যাটসম্যানদের পরে আরও দুই স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান (মিঠুন ও লিটন) রয়েছেন। যদি আজ সকালের সেশনটি কোনভাবে শেষ করা যায় তাহলে ব্যাটিং উইকেটে বড় সংগ্রহই গড়া যাবে। আর তা গড়তে পারলে জিম্বাবুইয়ে চাপে পড়বে। দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুইয়ের ইনিংস প্রথম ইনিংসের মতো আটকে রাখা গেলেই বাংলাদেশের জয় আসতে পারে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টেস্টে যে আধিপত্য বিস্তার করছে বাংলাদেশ, দ্বিতীয়দিনটি নিজেদের করে নিয়েছে, তৃতীয়দিনটিতেও এখন সেই ধারা বজায় থাকলে ম্যাচ বাংলাদেশের হাতের মুঠোতেই থাকবে।
×