ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আমতলীতে তিন ছিনতাইকারীকে গণধোলাই !

প্রকাশিত: ২৩:২৪, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

আমতলীতে তিন ছিনতাইকারীকে গণধোলাই !

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা ॥ বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ টেপুড়া এলাকা থেকে তিন ছিনতাইকারীকে জনতা ধরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে। পুলিশ হেফাজতে জিল্লুর রহমান রুবেল, মিরন মীর ও অলিদকে আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে রবিবার রাত ১০ টার দিকে। স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের অফিস বাজারের বিকাশ ও মুদি মনোহরদি ব্যবসায়ী মোঃ জসিম হাওলাদার রবিবার রাত নয়টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাইসাইকেলে দক্ষিণ টেপুড়া গ্রামের বাড়ী যাচ্ছিল। পথিমধ্যে দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া রহিমিয়া দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন ব্রীজের উপরে ওৎপেতে থাকা বেল্লাল মাদবরসহ চার ছিনতাইকারী বিকাশ ব্যবসায়ীকে মারধর ও চোখে মরিচের গুড়ি ছিটিয়ে দুই লক্ষ চার হাজার ৩’শ টাকা ছিনিয়ে নেয়। বিকাশ ব্যবসায়ীর ডাক চিৎকারে চারিদিক থেকে গ্রামের লোকজন ছুটে এসে ছিনতাইকারীদের ঘিরে ফেলে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ছিনতাইকারীরা মোটর সাইকেল ফেলে বিলের মধ্য দিয়ে পালিয়ে যেতে চেষ্টা করে। স্থানীয় জনতা জিল্লুর রহমান রুবেল মোল্লা (২৫) ও মিরন মীর (৩০) ও অলিদ (২৯) নামের তিন ছিনতাইকারীকে ধরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে খবর দেয়। ছিনতাইয়ের মুল হোতা বেল্লাল মাদবর পালিয়ে যায়। স্বজনরা আহত ব্যবসায়ী জসিমকে উদ্ধার করে আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করেছে। পুলিশ খবর পেয়ে তিন ছিনতাইকারীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে এবং আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, ছিনতাইকারী বেল্লাল মাদবরের নেতৃত্বে রুবেল, মিরন, ও অলিদসহ ১৫-২০ জনের একটি সঙ্গবদ্ধ দল অফিস বাজার এলাকার ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছে। এদের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ। চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ নানাবিধ অপকর্মে এরা জড়িত। তাদের কাছে মানুষ জিম্মি। রবিবার রাতে ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার সময় জনতা তাদের ধরে পুলিশে দিয়েছে। বিকাশ ব্যবসায়ী আহত মোঃ জসিম উদ্দিন হাওলাদার বলেন, দোকান বন্ধ করে বাইসাইকেলে বাড়ীতে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া রহিমিয়া দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন ব্রীজের উপরে ছিনতাইকারীরা মারধর ও মরিচের গুড়ি চোখে দিয়ে আমার সাথে থাকা দুই লক্ষ চার হাজার ৩’শ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। আমার ডাকচিৎকারে গ্রামের লোকজন এসে তিন ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলে। তিনি আরো বলেন আমার চোখে প্রচন্ড ব্যথা করছে। ছিনতাইকারী আহত জিল্লুর রহমান রুবেল ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করে বলেন, আমি মোটর সাইকেল চালাই। বাড়ীতে আসার কথা বলে বেল্লাল মাদবর আমাকে নিয়ে আসে। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জসিম হাওলাদারের টাকা ছিনিয়ে নেয়ার কথা আমাকে জানায়। আমি এতে রাজি না হওয়ায় আমাকে বেল্লাল ছুরি মেরে আহত করেছে। সে আরো জানান,বেল্লাল মাদরব মরিচের গুড়ি জসিম হাওলাদারের চোখে দিয়ে টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। অপর আহত ছিনতাইকারী মিরন মীর ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করে বলেন, আমাকে বেল্লাল মাদবর গাঁজা খাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসে। পরে মোটর সাইকেলে তুলে ব্রীজের উপরে নিয়ে আসে এবং কিছু বুঝে উঠার আগেই ব্যবসায়ী জসিম হাওলাদারকে মারধর করে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়েছে। আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নিখিল চন্দ্র শীল বলেন, আহত চারজনকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার বলেন, তিন ছিনতাইকারীকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×