ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শফিকুর রহমান

শিক্ষার্থী নিলমের সফলতা

প্রকাশিত: ০৭:৩০, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 শিক্ষার্থী নিলমের সফলতা

পড়াশোনার পাশপাশি সফল ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হওয়া সম্ভব। এতে পড়াশোনার ক্ষতি হয় না। বরং সমাজের নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়। পরিবারেও গুরুত্ব বাড়ে। সেটাই প্রমাণ করেছে মফস্বল শহর ফেনীর তাসরিবা আক্তার নিলম। নিলম নামেই তার পরিচিতি বেশি। পড়াশোনা করছেন ফেনী সরকারী কলেজে বিবিএ হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে দ্বিতীয় বর্ষে। প্রথম বর্ষে ফার্স্টক্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন সে। নিলম মনে করেন, ‘ক্ষুদ্্র অনলাইনভিত্তিক ব্যবসায় পড়াশোনার ক্ষতি হয় না। তবে দুটো সমানভাবে চালিয়ে যেতে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। পাশপাশি পরিবারের সাপোর্ট প্রয়োজন। নিলমের পরিবারের সকলে তাকে ব্যবসার কাজে সাহায্য, সমর্থন দেয়। নারী উদ্যোক্তা। ব্যবসা করে। এ আবার কি? আশপাশের মানুষের এমন দৃষ্টিভঙ্গি নিলমকে ব্যথিত করে। মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে বলে জানায়। ফেসবুকে নিলমের Fairy castle online shop নামে একটি গ্রুপ আছে। আরও আছে একটি পেইজ। কিভাবে ব্যবসার শুরু হলো জানতে চাইলে নিলম জানান, ‘২০১৪ সালে ফেসবুকে ড্রেসভিত্তিক ব্যবসার চিন্তা তার মাথায় আসে। ২০১৭ সালের ঘটনা। মাত্র ২৫ টাকার কিছু জিনিস ক্রয় করেন জুয়েলারি বানানোর উদ্দেশ্যে। কিন্তু পথেই জিনিসগুলো হারিয়ে যায়। পরে আবারও সেই জিনিসগুলো ক্রয় করেন। তারপর ১টি হ্যান্ডমেইড রিং বানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিতেই ব্যাপক সাড়া পড়ে। বলা যায় প্রথম কাজেই বাজিমাত। সকলের প্রশংসা পায়, অন্যদিকে নিলমেরও উৎসাহ বাড়ে। নিলম তৈরি করেন বিভিন্ন জুয়েলারি যেমন কানের দুল, নেকপিস, রিং, টিকলি, পায়েল, হলুদেও ব্রাইডাল/নন ব্রাইডাল জুয়েলারি, কাঠের গহনা, কখনও সুই সুতার কাজ করা গহনা ইত্যাদি। প্রায় সবই হাতের কাজ। অসম্ভব মনোযোগ ও যত্ন নিয়ে তিনি কাজ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি সব সময় সাশ্রয়ী মূল্যে উন্নত মানের পণ্য ক্রেতার হাতে তুলে দিতে চেষ্টা করি। ফেনীতে তার পণ্য ক্যাশঅন ডেলিভারিতে পাওয়া যায়। অন্য জায়গায় কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠানো হয় বলে তিনি জানান। প্রতিবন্ধকতার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাঁচামাল সংগ্রহের ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়, যার কারণে কিছু সময় অনেক অর্ডার এলেও দেয়া সম্ভব হয়না। নিজে তো পণ্যের ডিজাইন করেনই আবার কাস্টমার কিছুটা ভেরিয়েশন আনতে চাইলে সেটাও সাধ্যমতো করে দিতে চেষ্টা করেন। গরম গ্লু হাতে লেগে যায়। পিন বেধে যায়। তবুও জিনিসটা যেন সুন্দর হয় সে চেষ্টাই করেন তরুণ উদ্যোক্তা নিলম। পণ্যের আউটলুকটা যখন সুন্দরহয়। ক্রেতা সন্তুষ্টি অর্জনে সক্ষম হয়। তখন নিলমের খুব আনন্দ হয় বলে জানান। ক্রেতার সুবিধার প্রতি নিলম খুব মনোযোগী। পণ্যের কোন সমস্যা হলে তিনি ক্ষতিপূরণও দেন। অনলাইনভিত্তিক একটি শিক্ষা সংগঠন থেকে সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। লাভের টাকা পুনর্বিনিয়োগ করেন তিনি। নিজের একটা আউটলেট থাকবে, বেশি বেশি ইউনিক পণ্য তৈরি করবেন। এগুলোই হলো মফস্বল শহর ফেনীর তরুণ উদ্যাক্তা তাসরিবা আক্তার নিলম এর স্বপ্ন।
×