ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসি, ১১ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত: ১২:০৭, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

  কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসি, ১১ জনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুষ্টিয়া, ২৪ ফেব্রুয়ারি ॥ ফরিদুল হত্যা মামলায় এক আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড এবং ১১ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম করাদন্ড ও অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী আদালতে এই রায় প্রদান করেন। এ মামলার মোট ১২ আসামির মধ্যে ৮ জনই পলাতক। ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক ওই আসামির নাম জাগো (৩০)। সে কুষ্টিয়ার ইবি থানা এলাকার বানিয়াপাড়া গ্রামের নফছের আলীর ছেলে। যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তরা হলো, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার সোনাইডাঙ্গা গ্রামে বদর উদ্দিনের ছেলে ইলাম মন্ডল ওরফে কালু (৩২), বৃত্তিপাড়া এলাকার মনোয়ার মন্ডলের ছেলে পলাতক শহিদুল ইসলাম (৩০), গজনবীপুর এলাকার মৃত আলম ফকিরের ছেলে বাদশা ওরফে বাশি মন্ডল (৩৮), দেড়িপাড়া গ্রামে তোয়াক্কেল জোয়াদ্দারের ছেলে পলাতক আলিম ওরফে ঝড়ো (৩৮), বারুইপাড়া এলাকার আফাজ সর্দারের ছেলে আমিরুল ইসলাম (৩৫), একই এলাকার মৃত তাইজাল হোসেনের ছেলে পলাতক রহমত ওরফে সাইদুল (২৬), উজানগ্রাম এলাকার মোনাউল্লাহর ছেলে পলাতক বাবলু (৪০), ইজ্জত আলীর ছেলে পলাতক মিজানুর রহমান (৩৫), ইয়ার আলীর ছেলে পলাতক আলী হোসেন (২৫), আব্দুল মজিদ মন্ডলের ছেলে আসাদুল (২১) ও শামসুলের ছেলে পলাতক ইউনুচ (৩৫)। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। আদালত সূত্র জানায়, গত ২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার বারুইপাড়া মিনি ক্যানেল পাড়ে ফরিদুলকে সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে নিকটবর্তী ব্রিজের রেলিংয়ের ওপর রেখে যায়। পরদিন ২৪ অক্টোবর সকালে স্থানীয়রা মৃতদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশটি উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ বিষয়ে এসআই নুরুজ্জামান বাদী হয়ে ইবি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ে করেন। চাঁদপুরে একজনের ফাঁসি, ৪ জনের যাবজ্জীবন নিজস্ব সংবাদদাতা চাঁদপুর থেকে জানান, শাহরাস্তি উপজেলার খেড়িহরে ডাকাতের হাতে গৃহকর্তা হত্যা মামলায় মজিবুর রহমান বেপারীকে মৃত্যুদন্ড ও আবুল কাশেম, আনোয়ার হোসেন, মাহবুবুর রহমান ও কামালকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে আবুল কাশেমকে পৃথক ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সোমবার দুপুর ১টায় চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ জুলফিকার আলী খাঁন এই রায় দেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি মুজিবু রহমান খেড়িহর পূর্ব পাড়ার মঞ্জুর আহমেদ এর ছেলে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আবুল কাশেম মৃত হাসমত উল্যাহর ছেলে, আনোয়ার হোসেন চাঁন মিয়ার ছেলে, মাহবুবুর রহমান মৃত আব্দুল্লাহ মাস্টারের ছেলে। তাদের বাড়ি খেড়িহর গ্রামে এবং কামাল কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ থানার নর পাইয়া পূর্ব পাড়ার মৃত শাহ আলমের ছেলে। মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৬ জানুয়ারি রাত আনুমানিক দেড়টায় উপজেলার খেড়িহর গ্রামের মোঃ ফারুক এর বসতঘরে অধিকাংশ মুখোশধারী একদল ডাকাত অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত হয়ে ডাকাতি করতে আসে। ওই সময় ঘরে থাকা লোকজন টের পেয়ে ডাকচিৎকার করলে জেঠাৎ ভাই তাজুল ইসলাম এগিয়ে আসে। তখন উপস্থিত ডাকাতরা তাজুলকে ইটপাটকেল মারে এবং গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়। ঠিক ওই মুহূর্তে তাজুলের পিতা বুদরুছ ঘরের দরজা খুলে বের হলে ডাকাতরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এই সময় ডাকাতের তান্ডবে প্রত্যেক পরিবারের লোকজন এলোমেলো অবস্থায় ছুটাছুটি করলে ডাকাতরা ফারুকের ঘরে প্রবেশ করে তার স্ত্রী ঝর্ণা বেগমকে অস্ত্র ঠেকিয়ে স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। অপরদিকে গুলিবিদ্ধ তাজুল ইসলামের পিতা বুদরুছকে আহত অবস্থায় স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আব্দুর রহিমের কাছে নিয়ে যায়। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে ওইদিনই শাহরাস্তি থানায় ৩৯৬ ধারায় মামলা দায়ের করে। কিশোরগঞ্জে দেবরের মৃত্যুদন্ড নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ থেকে জানান, জেলার কুলিয়ারচরে ভাবিকে হত্যার দায়ে দেবর বাছির উদ্দিনকে মৃত্যুদন্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদন্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় মামলার অপর পাঁচ আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। সোমবার সকালে কিশোরগঞ্জের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহিম উপরোক্ত রায় দেয়। রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত কুলিয়ারচর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের মনির উদ্দিনের ছেলে বাছির উদ্দিন পলাতক ছিল। মামলার বিবরণে জানা গেছে, উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের আম্বিয়া খাতুনের সঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষক জজ মিয়ার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে চার ছেলেমেয়ে রয়েছে। জজ মিয়ার সঙ্গে তার স্ত্রী আম্বিয়া খাতুনের পারিবারিক মনোমালিন্য ছিল। এ অবস্থায় জজ মিয়া মৌখিকভাবে স্ত্রী আম্বিয়াকে তালাক দিলে তিনি বাবার বাড়ি চলে যান। কিছুদিন পর আবারও তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন জজ মিয়া। বিষয়টি জজ মিয়ার ভাই, আম্বিয়ার দেবর বাছির ও তার পরিবারের লোকজন সহজভাবে নেয়নি। এদিকে স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে স্বামী বিদেশ চলে যাওয়ায় ২০০২ সালের ২ মে দেবর বাছিরসহ কয়েকজন সিঁধ কেটে বসতঘরে ঢুকে আম্বিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এ ঘটনায় পরদিন ৩ মে নিহতের চাচা কায়েস উদ্দিন বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে কুলিয়ারচর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
×