ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম পলিটেকনিকে দ্বিতীয় শিফট বন্ধ ॥ শিক্ষার্থীদের ধর্মঘট

প্রকাশিত: ০৯:৩১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

চট্টগ্রাম পলিটেকনিকে দ্বিতীয় শিফট বন্ধ ॥ শিক্ষার্থীদের ধর্মঘট

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ দীর্ঘ দেড়যুগ চলমান থাকার পর দেশের ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে দ্বিতীয় শিফটের শিক্ষা কার্যক্রম অবৈধভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মূল ফটকের সামনের সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে দ্বিতীয় শিফটের শিক্ষার্থীরা। এ সময় ব্যানার ফেস্টুন টাঙিয়ে ও স্লোগানের মাধ্যমে কর্র্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে তারা। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, কর্মরত শিক্ষকরা তাদের সম্মানী হ্রাস পাওয়ায় দ্বিতীয় শিফটের শ্রেণী কার্যক্রম চালাতে অনীহা প্রকাশ করায় এ ধরনের কর্মসূচী পালনের উদ্যোগ নিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ সময় রাস্তায় ব্যারিকেড থাকায় যানবাহন চলাচলে বিঘœ ঘটায় খুলশী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও শিক্ষার্থীদের পক্ষ নিয়ে নীরব ভূমিকা পালন করেছে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীর পক্ষে। মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচী ও প্রতিবাদ সমাবেশ। শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়েছে, দীর্ঘ দেড়যুগ ধরে এ প্রতিষ্ঠানসহ দেশের ৪৯টি পলিটেকনিক ইউস্টিটিউটে দ্বিতীয় শিফটের শিক্ষা কার্যক্রম ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচী চলমান ছিল। হঠাৎ করে গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শিক্ষকরা অতিরিক্ত সম্মানির দোহাই দিয়ে দ্বিতীয় শিফটের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। এতে করে চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠানে থাকা প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থীর জীবন অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে চলেছে। এছাড়াও শিক্ষক সঙ্কট দূর করার জন্য খ-কালীন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। চার বছরের শিক্ষা জীবনের এ কোর্স শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও চাহিদা রয়েছে। কারণ, কারিগরি জ্ঞান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসব শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন কারখানা উন্নয়নে যেমন ভূমিকা রাখছে, তেমনি প্রবাসে থেকে বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাচ্ছে। প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেছে, প্রথম শিফটে কর্মরত প্রায় ৭০ জন শিক্ষক দ্বিতীয় শিফটেও শিক্ষাদান করেন। সরকারী বেতন স্কেল অনুযায়ী প্রথম শিফটের বেতনের সঙ্গে দ্বিতীয় শিফটের জন্য বেসিকের ৫০ ভাগ পেয়ে থাকেন এসব শিক্ষক। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রথম শিফট এবং দ্বিতীয় শিফট দুপুর দেড়টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত শিক্ষকরা শ্রেণী কার্যক্রম চালু রাখার বিধান থাকলেও শিক্ষকরা তা পালন করছেন না। শুধু তাই নয়, ইনস্টিটিউটের ভেতরেই শিক্ষার্থীদের ক্লাস বাদ দিয়ে প্রাইভেট পড়ানোর অভিযোগ আছে এসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী আবদুর রহমান জানিয়েছেন, দীর্ঘ প্রায় দেড়যুগ দ্বিতীয় শিফট চালু ছিল। ২০১৮ সালে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে ২০০৯ সালের ৩০ জুনে প্রণীত বেতন স্কেলে কর্মরত শিক্ষকরা দ্বিতীয় শিফটের জন্য বেসিকের ৫০ শতাংশ সম্মানী পাওয়ার নির্দেশনা ছিল। ২০১৮ সালে ১৫তম বেতন স্কেলে শিক্ষকরা সম্মানী নিয়েছেন। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে ৫ বার বৈঠক হয়েছে। এতে নতুন ফর্মূলায় তথা সম্মানী ২০০৯ সালের স্কেলে নির্ধারণ করায় ২০১৮ সালের জুলাই থেকে শিক্ষকরা সম্মানী নেয়া বন্ধ রেখেছেন। ফলে ৭০ জন নিয়মিত শিক্ষক ও ১৫ জন খ-কালীন শিক্ষক শ্রেণী কার্যক্রম গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পাঠদান থেকে বিরত রয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী, মন্ত্রণালয় এমনকি সংসদেও আলোচনা হলেও অর্থ মন্ত্রণালয় কোন অর্থ ছাড় দিচ্ছে না।
×