ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চারদিন শেয়ারবাজারে সূচক কমল

প্রকাশিত: ১১:৫২, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

চারদিন শেয়ারবাজারে সূচক কমল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে ব্যাংকের বিশেষ তহবিলের খবরে কিছুদিন উর্ধমুখী থাকার পর দেশের শেয়ারবাজারে আবার টানা দরপতন দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচকের পতনের মাধ্যমে টানা চার কার্যদিবস দরপতন ঘটল। বিশ্লেষকরা বলছেন, কম দামে শেয়ার কিনে বেশি দামে বিক্রির কারণে কিছুটা নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। এটি শেয়ারবাজারের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ফেব্রুয়ারি মাসের সমন্বয় শেষ হলেই লেনদেন বাড়তে শুরু করবে। এছাড়া মাসের শেষ সপ্তাহে মার্জিন ঋণ নিয়ে শেয়ার কেনার আদেশ কম থাকে, যার কারণেই বাজারে সাময়িক মন্দাবস্থা চলছে। এটি আগামীতে থাকবে না। এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো বিশেষ তহবিল গঠনের সুযোগ দেয়া হয়। নিজস্ব উৎস অথবা ট্রেজারি বিল বন্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো এ তহবিলের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৫ শতাংশ সুদে এ তহবিলের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে ব্যাংকগুলো, যা পরিশোধের সময় পাবে পাঁচ বছর। ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ সুদে এ তহবিল থেকে ঋণ দিতে পারবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ সুবিধা দেয়ার ফলে শেয়ারবাজারে টানা উর্ধমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। ৪ হাজার ৩৮৫ পয়েন্টে নেমে যাওয়া ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসএক্স বাড়তে বাড়তে ১৯ ফেব্রুয়ারি ৪ হাজার ৭৫৮ পয়েন্টে চলে আসে। ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা চার কার্যদিবস দরপতন হয়েছে। এই চার কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক কমেছে ১৩৭ পয়েন্ট। অবশ্য তার আগে ১০ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি টানা উত্থানে সূচকটি বাড়ে ৩৭৩ পয়েন্ট। বড় উত্থানের পর শেয়ারবাজারে দেখা দেয়া টানা দরপতনকে স্বাভাবিক বলছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, বড় উত্থানের কারণে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। এ কারণে মুনাফা তুলে নিতে বিনিয়োগকারীরা বিক্রির চাপ বাড়িয়েছে। এতে বাজারে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। শীঘ্রই বাজার আবার ঘুরে দাঁড়াবে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, মঙ্গলবার লেনদেনের শুরুতেই সূচকে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়। এতে ১০ মিনিটের লেনদেন ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ২২ পয়েন্ট কমে যায়। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত সূচকের এই নেতিবাচক প্রবণতা অব্যাহত থাকে। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৯ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৬২১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ২০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৫৫০ পয়েন্টে নেমে গেছে। ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৬৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সবকটি মূল্য সূচকের পতন হলেও ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৫টির। ৫১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিকে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কিছুটা বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬২৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬০০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ২৯ কোটি ১২ লাখ টাকা। টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির ২০ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভিএফএস থ্রেড ডাইংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ১৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যাল। এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- গ্রামীণফোন, ওরিয়ন ইনফিউশন, ফরচুন সুজ, সায়হাম কটন, সামিট পাওয়ার, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল এবং ওরিয়ন ফার্মা। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই ১১৫ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ১৪৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৫৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০০টির এবং ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
×