ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশেও ভাল খেলার প্রত্যাশা মুমিনুলের

প্রকাশিত: ১২:০৪, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বিদেশেও ভাল খেলার প্রত্যাশা মুমিনুলের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক হওয়ার পর প্রথম জয়টাই বড় ধরনের প্রস্বস্তি মুমিনুল হকের জন্য। কারণ ২০ বছর ধরে টেস্ট আঙ্গিনায় পদার্পণ করা বাংলাদেশ দল মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো ইনিংস ব্যবধানে জিতেছে। মিরপুরে একমাত্র টেস্টে ইনিংস ও ১০৬ রানে জিম্বাবুইয়েকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। অধিনায়ক হওয়ার পর টানা ৩ টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হারের পর অবশেষে নিজেই দলকে ইনিংস জয় এনে দিয়েছেন মুমিনুল। সর্বশেষ জয়টাও ছিল দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ইনিংস ব্যবধানে। দেশের মাটিতে এমনকি অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মতো দলকেও হারিয়েছে বাংলাদেশ। মুমিনুলের স্বপ্ন এবার বিদেশের মাটিতেও ভাল খেলার। সে জন্য তিনি মনে করেন ক্রিকেটারদের মানসিক দৃঢ়তা থাকা জরুরী। আগামী এপ্রিলে করাচীতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ দল, অপরাজিত ২০৩ রান করা মুশফিকুর রহীম সেই টেস্টে খেলবেন এমনটাই প্রত্যাশা মুমিনুলের। একটি জয় অনেক জরুরী যে কোন দলের জন্য। বিশেষ করে টানা পরাজয়ের বৃত্ত ভেঙ্গে ফিরে আসা এবং ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে দারুণ কার্যকর একটি জয়। সেই জয় পেয়ে গেছে বাংলাদেশ দল। টানা ৬ টেস্টে পরাজিত দলটি জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে কাক্সিক্ষত জয় তুলে নিয়েছে ৪৫০ দিন পর। মুমিনুল নিজেকে ফিরে পেয়ে ১৩২ রানের ইনিংস খেলেছেন, অধিনায়ক হিসেবেও পেয়েছেন প্রথম জয়। একমাত্র এই টেস্ট শুরুর আগেই তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘একটি জয় আসলেই সবকিছু বদলে যাবে। আত্মবিশ্ব০াসও ফিরে আসবে।’ যা বলেছিলেন তা কাজে প্রমাণ পাওয়া গেছে। জয় পাওয়ার পর মুমিনুল বলেন, ‘দল যেভাবে কাজ করবে, যেমনটা হওয়া উচিত সেভাবে মানে খেলোয়াড়রা দল হিসেবে কিভাবে কাজ করবে, কিভাবে খেলবে সেই জিনিসটা আমি সবসময় আসলে দেখতে চাইছিলাম। এটা আমি অনুভব করতে চাইছিলাম। এমনকি পেস বোলার থেকে শুরু করে স্পিনার, এমনকি ব্যাটসম্যানরা পর্যন্ত আপনার যেভাবে দলের যা দরকার সেভাবে করেছে। এই কারণে আমার কাছে মনে হয় ফলাফলটি এসেছে।’ কিন্তু এখন বিদেশের মাটিতেও ভাল করতে চান মুমিনুল। সে জন্য তার চাওয়া ক্রিকেটারদের মানসিক দৃঢ়তা যেন ভাল অবস্থানে পৌঁছে। তিনি বলেন, ‘আমি সবসময় যে জিনিসটা চেষ্টা করছি যে দেশেও যেমন টেস্ট জিততে চাই তেমন আমি স্বপ্ন দেখি বিদেশেও ভাল ক্রিকেট খেলব। সেই হিসেবে চিন্তা করলে আমাকে পেস বোলারদের বোলিং করাতে হবে, তারা বোলিং না করলে শিখবে না। আমরা তৈরি ছিলাম যে এমন কিছু করতে পারব। আমার কাছে মনে হয় এখানে মানসিক দৃঢ়তাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ক্রিকেটের ৯০ ভাগই মানসিক দৃঢ়তার ওপরে নির্ভর করে।’ মিরপুর টেস্টে নামার আগে মুমিনুল কথা দিয়েছিলেন দলের কোন ব্যাটসম্যান ১০০, ২০০ বা ৩০০ করবেন। সেটি অনেকাংশেই সত্য হয়েছে। মুমিনুল ১৩২ রানের ইনিংস খেলে টেস্টে সেঞ্চুরি সংখ্যায় দেশের সেরা তামিম ইকবালকে স্পর্শ করেছেন। তবে মুমিনুলের সব শতকই দেশের মাটিতে। মুশফিক অপরাজিত ২০৩ রানের ইনিংস খেলেছেন, যেটি হয়তো ট্রিপল সেঞ্চুরিও হয়ে যেতে পারতো। এ বিষয়ে মুমিনুল বলেন, ‘আমি যখন আশাকরি তখন বড় বড় আশাকরি। আমি ১০০, ১৫০-এর জন্য আশাকরি না। ২০০, ৩০০’র আশাকরি, আল্লাহর রহমতে মুশফিক ভাই ২০০ করে দিছে। পরের দিন থেকে ৪০০-৫০০ বলতে হবে তাহলে ৩০০-৪০০ করবে। আমি বিদেশের মাটিতে সেঞ্চুরি নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করি না। আমি চাই না যেন খারাপভাবে আমার মাথায় এটা প্রভাব বিস্তার করুক। তামিম ভাই বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান, তিন-চার- পাঁচটা ওপেনারের একজন। তামিম ভাইয়ের সঙ্গে আমার তুলনা কখনও হয় না।’ এই জয় এবার পাকিস্তানের বিপক্ষে করাচী টেস্টে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলেই বিশ্বাস মুমিনুলের। তবে সেখানে মুশফিকের মতো অভিজ্ঞ ও নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানকে দলে প্রত্যাশা করেন তিনি। মুশফিক নিরাপত্তা শঙ্কায় রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে খেলেননি। এ বিষয়ে মুমিনুল বলেন, ‘আমি কোন সময় চাপের মধ্যে ছিলাম না। আপনার যখন ভাল হবে তখন আস্তে আস্তে ভাল হতে থাকবে। আগামী যে পাকিস্তান সিরিজ আছে সেখানে আমি কেমন এবং দল হিসেবে ক্রিকেটাররা কেমন করছে সেটার দিকে তাকিয়ে আছি। এর আগে যে তিনটি ম্যাচ হেরেছি সেখান থেকে আমি কি শিক্ষা নিতে পেরেছি অধিনায়ক এবং ক্রিকেটার হিসেবে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই একটা জয় থাকলে তো আমার কাছে মনে হয় পুরো দলই আত্মবিশ্বাস ফিরে পায়। আমার কাছে মনে হয় পাকিস্তানে কাজে দিবে এ জয়। অধিনায়ক হিসেবে আমি তো সবসময় চাই সাকিব ভাই পর্যন্ত আসুক। যদিও সেটা সম্ভব নয়। অবশ্যই আমি মুশফিক ভাইকে চাই পাকিস্তান সিরিজে।’
×