ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বিদ্যুতে জাপানী বিনিয়োগ

প্রকাশিত: ০৯:১৯, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বিদ্যুতে জাপানী বিনিয়োগ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুত উৎপাদনে জাপানী বিনিয়োগের প্রত্যাশা করেছেন। বর্তমান সরকার বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতে জনগণের চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন কর্মপ্রকল্প অনুমোদন এবং বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। আরও বেশি স্বয়ংম্ভরতা অর্জনে বিদেশী দাতা দেশ ও সংস্থার সাহায্য-সহযোগিতাও জরুরী। উন্নয়নের অব্যাহত অগ্রযাত্রায় বিদ্যুত খাতে অংশীদারি ও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। জাপানের সঙ্গে বিদ্যুত উৎপাদনে সহযোগিতার ব্যাপারে আলোচনার সূত্রপাত ঘটে জাপানের সর্ববৃহৎ বিদ্যুত উৎপাদন প্রতিষ্ঠান জিরা কো ইঙ্কের (জেইআরএ) কোম্পানির সভাপতি সাতশী ওনডার সঙ্গে সাক্ষাতে। উল্লেখ্য, জিরাসহ আরও অনেক জাপানী কোম্পানি বাংলাদেশে বিদ্যুত উৎপাদনে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করে তা আরও বাড়ানোর ওপর বিশেষ জোর দেন। সাতশী ওনডা প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন জিরা কোম্পানি জাপানে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনে সক্ষম। আর এটা দেশের সর্বমোট উৎপাদনের অর্ধেক (৫০%)। রিয়ালেন্স বাংলাদেশ পাওয়ার এবং এলএনজি কোম্পানির যৌথ প্রকল্প সম্পর্কেও জিরা সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন, যা মেঘনা ঘাটে একটি ৭১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করছে। যেখান থেকে ২০২২ সাল নাগাদ বিদ্যুত উৎপাদন শুরু হবে। সাতশী উল্লেখ করেন, তারা সামিটের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আরও কয়েকটি বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনে বিশেষ আগ্রহী। সামিট ইতোমধ্যে জাপানী বিভিন্ন বিদ্যুত কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে কেন্দ্র তৈরির ব্যাপারে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক অঞ্চলেও জাপান বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। এমন কর্মযোগকে এগিয়ে নিতে জাপান ইতোমধ্যে আগ্রহপত্র (ইওআই)ও জমা দিয়েছে। জাপান বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম উন্নয়ন সহযোগী দেশ। শিল্পোন্নয়নের সমৃদ্ধ দেশ জাপান বাংলাদেশকে তার অব্যাহত উন্নয়ন যাত্রায় যান্ত্রিক সহযোগিতাসহ বিশেষজ্ঞ পরামর্শও দিয়ে যাচ্ছে। ২০২০ সালকে ঘোষণা করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনের বছর। তেমন লক্ষ্যমাত্রায় বাংলার ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেয়ার কর্মপরিকল্পনাও সরকার জোর প্রচেষ্টায় এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন উপজেলায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শতভাগ বিদ্যুতায়ন কর্মযোগ উদ্বোধন করে দেশের প্রতিঘরে আলো জ্বালানোর নির্দেশনা দিয়েছেন সামাজিক বলয় থেকে শুরু করে সর্বমানুষের গৃহেই শুধু নয়, চিন্তা-চেতনায় ও আত্মশক্তিতে দ্যুতিময় দেশ বাংলার মানুষকে এক নতুন মাত্রা দেবে। স্থবিরতা আর পশ্চাৎপদ কূপম-ূকতাকে কাটিয়ে মানুষ আজ আলোর মিছিলে জোর কদমে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। সেখান থেকে পিছু হটার কোন সুযোগ কিংবা শঙ্কা নেই। নতুন নতুন বিদ্যুতায়ন দেশের সম্ভাবনাময় শিল্প-কারখানার জগতকেও নানা মাত্রিকে এগিয়ে নেবে। সচল এবং গতিশীল হবে দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির চাকা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ তৈরিতে বিদ্যুতের মতো জ্বালানি সম্পদ নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায়ও অবিস্মরণীয় ভূমিকা রাখবে। এর আগে বাংলাদেশ নেপালের সঙ্গে জলবিদ্যুত মহাপ্রকল্পে একত্র কাজ করার যে সম্ভাবনা তৈরি করেছে সেটাও আমাদের দেশকে বিদ্যুত শক্তিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে যুগান্তকারী অবদান রাখবে। বিদ্যুতকে অনেক বেশি গতিশীল করতে বর্তমান সরকার সৌরবিদ্যুত, জলবিদ্যুত আর বায়ু বিদ্যুতেও বিশেষ মনোযোগী হয়েছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ খাতটি এখন সর্বমানুষের কল্যাণে নিয়োজিত হতে খুব বেশি সময় নেবে না। জনবান্ধব এই সরকার সাধারণ মানুষের কল্যাণে প্রয়োজনীয় মেগা প্রকল্পগুলোকে বাস্তবের দোরগোড়ায় নিয়ে যাবে নিশ্চয়ই।
×