ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রূপকল্প-২০৪১

প্রকাশিত: ০৮:৫৭, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

রূপকল্প-২০৪১

সরকার দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদী এবং সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা তথা স্বপ্ন নিয়ে অগ্রসর হতে আন্তরিক ও সদিচ্ছুক। বলা আবশ্যক যে, ইতোপূর্বের কোন সরকারের মধ্যেই উন্নয়নের এই স্বপ্ন তো দূরে থাক, এমনকি ধারাবাহিকতাও লক্ষ্য করা যায়নি। সরকারের সেই স্বপ্নের পর্যায়ক্রমিক ধাপগুলোর বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১-এর অনুমোদন দেয়া হয়েছে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের বৈঠকে। উল্লেখ্য, এর আগে সরকার রূপকল্প-২১ ঘোষণা করেছিল, যার সুফল দেশ ও জাতি পেতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে মানুষের মাথাপিছু আয় ও গড় আয়ু বেড়েছে। জাতীয় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ১৫-এর ওপরে। বিদ্যুত উৎপাদনে দেশ প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। মুজিববর্ষে বাংলার ঘরে ঘরে আলো পৌঁছে দেয়ার অঙ্গীকার করেছে সরকার। নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্রসহ দশটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। সৌদি আরব, জাপানসহ বিদেশী বিনিয়োগ আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদায় উন্নীত হয়েছে। উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির এই ধারাবাহিকতায় প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা-২০২১-এর সাফল্যের পর সরকার এবার অগ্রসর হচ্ছে রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নিয়ে। এই পরিকল্পনা যথার্থভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে তখন মানুষের মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে ১২ হাজার ৫০০ ডলারের বেশি। মোট দেশজ উৎপাদন ডিজিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। হতদরিদ্রের হার নেমে আসবে শূন্যের কোঠায়। মানুষের গড় আয়ু বেড়ে হবে ৮০। উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ ও উচ্চ আয়ের দেশগুলো যে উন্নয়নের পথ পাড়ি দিয়েছে সেই ইতিবাচক দিকগুলো বিবেচনায় নিয়েই অগ্রসর হতে চায় সরকার। বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছে। এর মধ্যে ১১টি চালু হয়েছে, ৮৯টি প্রক্রিয়াধীন। মাত্র সাত দিনে এসব জোনে বিদ্যুত দেয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। বিদ্যুতের সমস্যাও নেই বর্তমানে। সর্বোপরি রাশিয়া ও ভারতের সহযোগিতায় রূপপুরে নির্মাণাধীন দুটি পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে ২০২৪ সাল নাগাদ পাওয়া যাবে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত। দ্বিতীয় পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে জায়গা খোঁজা হচ্ছে, যেটির দরপত্র আহ্বান করা হবে আগামী বছর। অপেক্ষাকৃত দরিদ্র ও অনুন্নত এলাকায় এটি নির্মাণ করা হবে। আগামীতে একটি দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রায় ১০ শতাংশ জাতীয় প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে আগামীতে বাজেটের আকারও অনেক বড় করার পূর্বাভাস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। আগামী অর্থবছরে জাতীয় বাজেট ছাড়িয়ে যেতে পারে ৪ লাখ ষাট হাজার কোটি টাকার বেশি। গত কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। বেসরকারী খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, রফতানি আয় ও রেমিটেন্স প্রবাহের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকলে আগামীতে ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি অর্জন অসম্ভব হবে না।
×