ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এশিয়ার শেয়ারবাজারে ধস

প্রকাশিত: ০৭:৪৫, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 এশিয়ার শেয়ারবাজারে ধস

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকায় এর প্রভাবে ধস নেমেছে এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলোতে। একই অবস্থা সুদূর যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াতেও। এসব এলাকার প্রায় সবগুলো শেয়ারবাজারেই সূচকের পতন হয়েছে আশঙ্কাজনক হারে। শুক্রবার গত ৯ বছরের মধ্যে ওয়াল স্ট্রিটে এক দিনেই সূচকের পতন সবচেয়ে বেশি হয়েছে। সাংহাই ও টোকিওতে ৩.৭ শতাংশ সূচকের পতন হয়েছে হংকংয়ে ২.৫ শতাংশ ও সিউলে ৩ শতাংশের বিশি সূচকের পতন হয়েছে। তেলের দাম কমে গেছে এবং চাহিদা চুক্তি হতে পারে। এপি। ওয়াল স্ট্রিটের এস এ্যান্ড পি ৫০০-এর সূচক ১২ শতাংশ পড়ে গেছে। চীনের পর করোনাভাইরাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা এখন দক্ষিণ কোরিয়ায়। ভাইরাস আতঙ্কে বড় ধস নেমেছে দক্ষিণ কোরিয়ায় শেয়ারবাজারে। দক্ষিণ কোরিয়ার কসপির সূচক কমে গেছে ৩ শতাংশের বেশি। জাপানের নিক্কেই ২২৫-এর সূচক পড়ে গেছে ৩.৭ শতাংশ এবং সাংহাই কম্পোজিট এক্সচেঞ্জের সূচক কমে গেছে ৩.৭ শতাংশ। হংকংয়ের হাং সেংয়ের সূচক পড়ে গেছে ২.৫ শতাংশ। সিডনির এস এ্যান্ড পি-এএসএক্স ২০০-এর সূচক কমে গেছে ৩ শতাংশের বেশি। নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণপশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোর বাজারেও সূচকের পতন ঘটেছে। বিনিয়োগকারীরা আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন গত ডিসেম্বরে চীন থেকে ছড়ানো এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে। তবে ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইরানে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বড়তে থাকায় ভয় আরও ছড়িয়ে পড়ছে যে করোনা বৈশ্বিক হুমকিতে পরিণত হচ্ছে যা বাণিজ্য ও কলকারখানায় ছন্দপতন ঘটাতে পারে। বৃহস্পতিবার উদ্বেগ আরও বেড়েছে যখন যুক্তরাষ্ট্র এই প্রথম একজনের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কথা জানায় যিনি বিদেশে ভ্রমণ করেননি বা আক্রান্ত কারোর সংস্পর্শে আসেনি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভাইরাস মোকাবেলায় হোয়াইট হাউসকে সহায়তা করতে অভিজ্ঞ জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সাহয্য নিচ্ছেন। তারা ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের কাছে প্রতিবেদন দেবেন। ট্রাম্প ভাইরাস মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টার দায়িত্ব পেন্সের ওপর অর্পণ করেছেন। এদিকে করোনাভাইরাসের কারণে ধস নেমেছে চীনের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে। স্থবির হয়ে পড়ছে দেশটির শিল্পখাত। ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে না আসায় চলতি বছরের জন্য আবারও দেশটির প্রবৃদ্ধি কমিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের আর্থিক দূরবস্থার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পুরো বিশ্বে। চলমান করোনাভাইরাসের প্রকোপে ইকোনমিক পাওয়ার হাউস চীনে অর্থনীতির শক্তিশালী চালিকাশক্তি কাঁচামালের আমদানি রফতানি কমেছে। ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়েছে কোটি কোটি ডলার। রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। ধস নেমেছে পুরো সরবরাহ ব্যবস্থায়। বিশ্বের অন্যতম রফতানিকারক এ দেশের আমদানি রফতানি ব্যাহত হওয়ায় দেশটি থেকে ব্যবসায়িক কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছে অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বলছে, ২০২০ সালে চীনের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ, পুরো বিশ্ব প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩ দশমিক ২ শতাংশ। ভাইরাস আতঙ্কে ঘরে অবরুদ্ধ থাকতে হয় বলে চীনসহ করোনার প্রকোপ বেড়েছে এমন সব দেশে বেড়েছে অনলাইনে বেচাকেনা, ইন্টারনেটের ব্যবহার আর মোবাইলে গেমস খেলার প্রকোপ। চীন অন্যতম বাণিজ্যিক অংশীদার দেশ হওয়ায় করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্রাজিলের অর্থনীতি। ডলারের বিপরীতে কমেছে রিয়েলের মান। করোনা আতঙ্কে দেশটিতে বেড়েছে মাস্কের বিক্রি।
×