ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ফেলে দেয়া সামগ্রী দিয়ে পণ্য তৈরি

প্রকাশিত: ০৮:০২, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 ফেলে দেয়া  সামগ্রী দিয়ে  পণ্য তৈরি

টাঙ্গাইলের মধুপুরে ফেলে দেয়া সামগ্রী দিয়ে গ্রামীণ দরিদ্র নারীরা তৈরি করছেন, টিসুবক্স, কলমদানি, জুয়েলারি বক্স, ওয়ালম্যাট, ব্যাগসহ হরেক রকমের শৌখিন পণ্যসামগ্রী। স্থানীয় এক নারী উদ্যোক্তা দরিদ্র এসব নারীকে নিজ উদ্যোগে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করেছেন দক্ষ কর্মীতে। এর ফলে তৈরি হয়েছে দরিদ্র নারীদের কর্মসংস্থানের। এখানে উৎপাদিত এসব পণ্য দেশের সীমানা পেরিয়ে চলে যাচ্ছে উন্নত দেশগুলোতে। মধুপুর উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পাহাড়ী অঞ্চল। এখানকার অধিকাংশ নারীই গৃহিণী। গৃহস্থালি কাজ করেই তাদের সময় কাটে। তারা স্বামী-সন্তানের আয়ের উপরই নির্ভরশীল। এসব নারী স্বাবলম্বী করতে কাজ করছেন রাহেলা জাকির নামের একজন নারী উদ্যোক্তা। তিনি মধুপুরের বনাঞ্চল জাঙ্গালিয়া গ্রামে প্রতিষ্ঠিত করেছেন হস্তশিল্পের কারখানা। তার এ কারখানায় কাজ করছেন প্রায় এক’শ নারী। এসব নারীদের তিনি দিয়েছেন হস্তশিল্প তৈরির প্রশিক্ষণ। এ কারখানায় ফেলে দেয়া কলাগাছ আর আনারসের পাতা দিয়ে গ্রামীণ নারীরা তৈরি করছেন টিসুবক্স, কলমদানি, জুয়েলারি বক্স, ওয়ালম্যাট, ব্যাগ, চাবির রিংসহ নিত্যপ্রয়েজনীয় হরেক রকমের সৌখিন পন্য। জানা যায়, আনারসের রাজধানী খ্যাত মধুপুরে ২০১৭ সালে এই হস্তশিল্পের কারাখানার পথচলা শুরু। এ অঞ্চলে আনারসের পাশাপাশি প্রচুর কলার আবাদ হয়ে থাকে। প্রথমে ফেলে দেয়া কলাগাছ আর আনারসের পাতা সংগ্রহ করা হয়। এরপর তা মেশিনের মাধম্যে প্রক্রিয়াজাত করে এক ধরনের সুতা তৈরি করেন এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা। এই সুতা দিয়ে গ্রামের দরিদ্র মহিলারা তৈরি করছেন নিত্য প্রয়োজনীয় শৌখিন পণ্য সামগ্রী। গ্রামের এসব নারীর নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় তৈরি করা আকর্ষণীয় এসব পণ্য যাচ্ছে চীনসহ উন্নত দেশগুলোতে। এখানে কর্মরত নারীদের আর্থিক সচ্ছলতা ফিরে এসেছে গ্রামীণ নারীদের। শুরুতে কাজটি কঠিন মনে হলেও এখন অনেকটাই সহজ হয়ে উঠেছে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীদের এখানে কাজের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। এতে স্থানীয় অন্য নারীরাও কাজ করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এর ফলে এ অঞ্চলের নারীদের জন্য তৈরি হয়েছে কর্মসংস্থানের। এখানে কাজ করে তারা হচ্ছেন আর্থিকভাবে সচ্ছল। দরিদ্র নারীদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলাই তার লক্ষ্য বলে জানালেন নারী উদ্যোক্তা রাহেলা জাকির। তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক কাঁচামাল দিয়ে তৈরি এসব পণ্য পচনশীল হওয়ায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বহিঃবিশ্বে। এ শিল্পের সম্প্রসারণ করা গেলে দরিদ্র নারীদের যেমন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, তেমনই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও রাখবে গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা। টাঙ্গাইল জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের উপ-পরিচালক নাজনীন সুলতানা জানান, এটিকে একটি সম্ভাবনাময় শিল্প বলে মনে করছেন জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদফতর। এ শিল্পের প্রসার ও উৎপাদিত পণ্যের বাজার তৈরিতে কাজ করছেন তারা। -ইফতেখারুল অনুপম, টাঙ্গাইল থেকে
×