ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তেল সরিয়ে ফেঁসে যাচ্ছেন বাঘারপাড়ার ওসি!

প্রকাশিত: ০৯:৪৩, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

তেল সরিয়ে ফেঁসে যাচ্ছেন বাঘারপাড়ার ওসি!

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ ভ্রাম্যমাণ আদালতের জব্দ করা নকল সরিষার তেল সরিয়ে ফেঁসে যাচ্ছেন সদ্য বদলি হওয়া যশোরের বাঘারপাড়া থানা পুলিশের ওসি জসিম উদ্দীন। একটি ভেজাল তেল ও গুড়ের কারখানা থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিপুল পরিমাণ জব্দ করা মালামাল থেকে প্রায় এক হাজার লিটার নকল সরিষার তেল তিনি আত্মসাৎ করেছেন। এ ঘটনায় যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-সার্কেল) জামাল আল নাসের ওসি জসিম উদ্দীনের বিপক্ষে বাঘারপাড়া থানায় জিডি করেছেন। থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি উপজেলার নারিকেলবাড়িয়ায় একটি ভেজাল গুড়ের কারখানায় বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া আফরোজ ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালান। এ সময় কারখানা থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বিপুল পরিমাণ চিনির খালি বস্তা, দশ হাজার কেজি ভেজাল গুড়, কয়েক হাজার কেজি ভেজাল সরিষার তেল ও বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য জব্দ করেন। এদিন গভীর রাত পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা শেষে জব্দ করা সমস্ত মালামাল ওসি জসিম উদ্দীনের হেফাজতে দেন নির্বাহী অফিসার তানিয়া আফরোজ। ওসি জসিম উদ্দীন সমস্ত মালামাল একটি ট্রাকে করে থানায় নিয়ে আসেন। পরদিন তা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপস্থিতিতে বাঘারপাড়া পৌরসভার ময়লাখানায় ধ্বংস করা হয়। জানা গেছে, বিপুল পরিমাণ এ ভেজাল তেলের মধ্যে থেকে ওসি জসিম উদ্দীন ২১ ড্রাম (প্রতি ড্রামে প্রায় ৪৫ কেজি) সরিষা তেল আত্মসাতের উদ্দেশ্যে থানা অভ্যন্তরে পরিত্যক্ত একটি ঘরে লুকিয়ে রাখেন। এ সংবাদ জানাজানি হলে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-সার্কেল) জামাল আল নাসের বিষয়টি তদন্ত করতে বাঘারপাড়া থানায় আসেন। তদন্ত শেষে তিনি বিষয়টির সত্যতা পান। এরপর তিনি এ বিষয়ে থানায় জিডি করেন। জিডি নং ২২২৬। এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-সার্কেল) জামাল আল নাসেরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিষয়টি এখনও প্রমাণিত হয়নি। ইউএনওর সঙ্গে কথা হয়েছে। সেগুলোও ধ্বংস করা হবে। বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানিয়া আফরোজ জানিয়েছেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা শেষে সব মামলামাল ওসির হেফাজতে দেয়া হয়। আনুমানিক ৪০ ড্রামের মতো তেল ছিল। পরদিন সেগুলো ধ্বংস করার জন্য ময়লাখানায় নেয়া হয়। তেল ও গুড়ের রং একই রকম হওয়ায় তখন বোঝা যায়নি। কোনটা তেল আর কোনটা গুড়। ওই দিন রাতে ২১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠানের জন্য ব্যস্ততার মাঝে ফিরে আসা হয়। ওসি জব্দ করা তেল থেকে আত্মসাৎ করেছেন, নাকি আমার আসার পরে তিনি সেগুলো আলাদাভাবে নিয়ে এসেছেন সেটা তদন্ত করলেই সত্যটা বেরিয়ে আসবে। উল্লেখ্য, ২৫ ফেব্রুয়ারি বাঘারপাড়া থেকে বদলি হয়েছেন ওসি জসিম উদ্দীন।
×