ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পুনর্মিলনীতে উচ্ছ্বসিত জবি দর্শন বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ০৯:৪৭, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

পুনর্মিলনীতে উচ্ছ্বসিত  জবি দর্শন বিভাগের  প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা

জবি সংবাদদাতা ॥ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দর্শন বিভাগ এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশনের প্রথম পুনর্মিলনী ‘সৌহার্দ্য ও স্মৃতির বন্ধনে আবদ্ধ’ হয়ে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় যে ক’টি বিভাগ নিয়ে গর্ব অনুভব করে, দর্শন বিভাগ তাদের মধ্যে অন্যতম। সত্য ও ন্যায়সঙ্গত সমাজ প্রতিষ্ঠা করাই দর্শন ভাবনার মূল। তাই দর্শনের সুদীর্ঘ ইতিহাসে তার তাত্ত্বিক দিকের পাশাপাশি মানবকল্যাণের দিকেরও সমগুরুত্বও প্রকাশ লক্ষ্য করা যায়। আলোচনা অনুষ্ঠানে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমেদ বলেন, দর্শন আছে বলে সাহিত্য সর্বজনীন। দর্শন যুক্তি মেনে চলে, যুক্তি ছাড়া এক পা আগায় না। দর্শনের রয়েছে সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে রাখার ক্ষমতা। অনুষ্ঠানের শুরুতে উদ্বোধনী র‌্যালি ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও স্মরণিকা ‘প্রত্যুষ’এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। জবি দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. চঞ্চল কুমার বোস। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় করেন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং প্রথম পুনর্মিলনীর আহ্বায়ক ড. মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলাম। আহ্বায়কের বক্তব্যে ড. মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলাম বলেন, দর্শন বিভাগের প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে প্রাণের উচ্ছ্বাস ও বাঁধভাঙ্গা আনন্দের জোয়ার উঠেছে সে জোয়ারে সব অমঙ্গল দূরীভূত হয়ে যাবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাবে সে কামনা করছি। পুনর্মিলনী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অনিক সাহা বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একত্রিত করে এ্যালামনাই গঠন করার লক্ষ্যে দর্শন বিভাগের প্রথম পুনর্মিলনী আয়োজন করা হয়। একজন শিক্ষার্থী যখন তার স্নাতক বা স্নাতকোত্তর শেষ করে বের হয়ে যায়, তখন তার নিজ বিভাগ বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পুনর্মিলনী বা এ্যালামনাই হলো ছাত্রছাত্রীদের একত্রিত করার মাধ্যম। এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশনের প্রথম পুনর্মিলনী সম্পর্কে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অনুভূতি জানতে চাইলে দর্শন বিভাগের ২০১০-১১ সেশনের শিক্ষার্থী জি এম শাহিদুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছিলাম আজকের এই দিনটির জন্য। বিভাগের সিনিয়র জুনিয়র উপর্যুপরি সহপাঠীদের সঙ্গে একযোগে সাক্ষাত পাওয়া সত্যি এক অসাধারণ অনুভূতি। এমন অনুভূতি জীবনে বারবার আসুক। ২০০১-০২ সেশনের শিক্ষার্থী মোঃ জিয়াউদ্দিন বলেন, সবার মাঝে ভালবাসা যাতে সারাজীবন টিকে থাকে সেই আশা ব্যক্ত করছি এ্যালামনাইয়ের মাধ্যামে। ২০০১-০২ সেশনের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার বলেন, আমরা সবাইকে নিয়ে এই এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশন কাজ করতে চাই। যাতে সবার মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল থাকে। ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম মামুন বলেন, এই এ্যালামনাইয়ের মাধ্যমে সিনিয়র ও জুনিয়রের মাঝে একটি সেতুবন্ধন তৈরি হবে। প্রাক্তনরা কর্ম ও বাস্তব জীবনে একে অপরের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবে। এ্যালামনাইয়ের মাধ্যমে অনেক পুরনো দিনের বন্ধু ছোট ভাই বড় ভাইদের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। আমি মনে করি, এ্যালামনাইয়ের মাধ্যমে আমাদের সেই প্রিয় ক্যাম্পাস জীবনকে ফিরিয়ে দিল, যা লাইফলাইন হিসেবে কাজ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী ওয়ালীউল্লাহ সজীব বলেন, দর্শন বিভাগের এ্যালামনাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ এ্যালামনাই হবে বলে আমি আশা করছি। যুগযুগ ধরে বেঁচে থাকুক আমাদের এই এ্যালামনাই সংগঠন। দিনব্যাপী এ আয়োজনের মধ্যে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং র‌্যাফেল ড্রসহ বিভিন্ন আয়োজন। পুনর্মিলনীকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। দর্শন বিভাগের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ছবি তোলার জন্য তৈরি করা হয়েছে বিলবোর্ড। যেখানে এক সময়ের সহপাঠীদের সঙ্গে ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দী হতে দেখা যায় তাদের।
×