ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চীন থেকে শিক্ষা নিয়ে ‘ভিটামিন সি’ প্রয়োগে সুফল পাচ্ছে করোনা আক্রান্তরা

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ২৮ মার্চ ২০২০

চীন থেকে শিক্ষা নিয়ে ‘ভিটামিন সি’ প্রয়োগে সুফল পাচ্ছে করোনা আক্রান্তরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট ॥ করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। চীনের আমদানি করা এই ভাইরাসের প্রকোপ এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে যে আমেরিকার মতো শক্তিশালী দেশও আক্রান্ত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মারাত্মক করোনার ভাইরাসজনিত ঘটনা ৬৫,০০০ ছাড়িয়েছে এবং এক হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছে। একই সঙ্গে ভারতে লক্ষ লক্ষ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও করোনার ঘটনা ক্রমাগত বাড়ছে। তবে ভারত থেকে নিউ ইয়ার্কের চিকিৎসক এবং নার্সরা দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ যে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জীবন তারা বাঁচাতে পারবে। প্রকৃতপক্ষে, বিশ্বের সমস্ত দেশের চিকিৎসকরা রোগীদের জন্য ঈশ্বর হয়ে জীবন সুরক্ষায় কাজ করছেন। করোনার প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ করোনা প্রতিরোধে সারাদেশে ১০দিনের লক ডাউন চলছে। তবে, এখনও পর্যন্ত করোনার চিকিৎসার কোন সুনির্দিষ্ট কোন ওষুধ আবিষ্কার করা হয়নি। নেই কোন ভ্যাকসিনও। এই কারণেই এটি নিয়ন্ত্রণ করা ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে। এই অবস্থায় নিউ ইর্য়কের চিকিৎসকরা বিচ্ছিন্নভাবে করোনার রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি একটি ভিটামিনের একটি কড়া ডোজ দিচ্ছেন। এর আগে চীনও করোনা আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে একই ভিটামিন ব্যবহার করেছিল। যাতে রোগীদের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। এই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ভিটামিন চীনকে ধ্বংসকারী করোনার ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে। ২৮ মার্চ ভারতীয় উত্তরাবঙ্গ সংবাদের অনলাইন সংস্কারে এই দাবি করা হয়। ওয়াশিংটনের চিকিৎসকরা করোনায় আক্রান্ত রোগীকে ভিটামিন সি প্রয়োগ করছে। ভিটামিন সি নাকি চীনের চিকিৎসকরাও প্রয়োগ করেছে। প্রকৃতপক্ষে নিউইর্য়কের চিকিৎসকরা হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের জন্য ভিটামিন সি-এর কড়া ডোজ দিচ্ছেন। এর কারণ হ’ল ভিটামিন সি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। চীনা চিকিৎসকরা করোনা রোগীদের চিকিৎসায়। এই ভিটামিন ব্যবহার করেছিল। তাতে খুব ভাল ফল পাওয়া গিয়েছিল। করোনার ভাইরাসের জন্য প্রথম থেকেই বলা হয়ে আসছে যে, শরীরের যদি রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আরও ভাল অনাক্রম্যতা থাকে, তবে তা এই সংক্রমণটি এড়াতে সম্ভব। এই কারণে ভারতের চিকিৎসকরাও প্রতিনিয়ত পরামর্শ দিচ্ছেন যে করোনাকে এড়ানোর সর্বোত্তম উপায় হলো নিজেকে ঘরে আটকে রাখা। সেই সঙ্গে এমন খাবার খাওয়া যা রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করে। অনলাইন প্রতিবেদনের দাবি করা হয়। সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিউইর্য়কের নর্থওয়েল হেলথ হাসপাতালের ডাঃ অ্যান্ড্রু ওয়েবার জানিয়েছেন, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে শিরার মাধ্যমে ১৫০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি ডোজ দেওয়া হচ্ছে। এর পরে দিনে তিন থেকে চারবার এবং ভিটামিন সি পরিপূরকগুলি শরীরে সরবরাহ করা হয়। চীনের উহান শহর থেকে করোনা যাত্রা শুরু করেছিল। চীনের জঙ্গনান হাসপাতালের চিকিৎসকরাও এই পদ্ধতি অবলম্বন করেছিলেন। তারা করোনার রোগীদের ভিটামিন সি এর অতিরিক্ত ডোজ দেওয়া শুরু করেছিলেন। যার পরে চিকিৎসকরা দেখতে পান যে, অন্যান্য রোগীদের সঙ্গে ভিটামিন সি দেওয়া রোগীদের ভিটামিন সি গ্রহণ করেননি তাদের চেয়ে ভাল পুনরুদ্ধার হয়েছিল। চীনা চিকিৎসকদের কাছ থেকে এই অভিজ্ঞতা থেকে শেখা। এখন আমেরিকান চিকিৎসকরাও এটি প্রয়োগ করছেন। ডাঃ ওয়েবার চিকিৎসার সময় করোনা রোগীদের অভিজ্ঞতার সাক্ষাৎকার নিয়েসছিলেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের দৈনিক ৯০ এবং একজন মহিলার জন্য প্রতিদিন ৭৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি প্রয়োজন। তবে একজন করোনার রোগীর এই পরিমাণের পরিমাণ ষোল গুণ হয়। এটি বার বার দেওয়া হচ্ছে। যা তাদের মধ্যে ইতিবাচক ফলাফল দেখছে। ডাঃ ওয়েবার বলেছেন, রোগীদের ভিটামিন সি এর সঙ্গে ম্যালেরিয়া ওষুধ হাইড্রোক্সিলোক্লোইন এবং অ্যান্টিবায়োটিক অ্যাজিথ্রোমাইসিন দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া রক্ত পাতলা ওষুধও দেওয়া হচ্ছে। ডাঃ ওয়েবারের মতে, যখন করোনার সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব ঘটে তখন দেহে সেপসিস তৈরি হয়। এটি শরীরে ভিটামিন সি এর সম্পূর্ণ অভাব দেখা দেয়। এর ফলে শরীরের প্রতিরোধের ব্যাপক ক্ষতি হয়। রোগীকে সংশোধন করতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি দেওয়া হয়। নর্থ-ওয়েস্ট হেলথ গ্রুপের মুখপাত্র জেসন মোলিনেটও বলেছন, করোনার রোগীদের চিকিৎসার জন্য ভিটামিন সি ব্যবহার করা হচ্ছে। এই গোষ্ঠীটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২৩টি বড় হাসপাতাল পরিচালনা করে। ৭০০টিরও বেশি করোনার রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে অন্যান্য ওষুধের পাশাপাশি কতজনকে ভিটামিন সি দেওয়া হচ্ছে, তা তিনি পরিষ্কার করেননি। নিউইর্য়কে বর্তমানে করোনার প্রায় ২৫,৬৬৬ কেস রয়েছে। ইউএস ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন অফ আমেরিকা অনুযায়ী, ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ওহানের ঝোংনান হাসপাতালে ভিটামিন সি ট্রায়াল চলছে। এই সংক্রান্ত একটি সম্পূর্ণ প্রতিবেদন সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাওয়া যাবে। এদিকে করোনা ভাইরাস সংক্রামণে ভিটাসিন ব্যবহার সর্ম্পকে লালমনিরহাট জেলার সিভিল সার্জন নির্মূলেন্দ্র রায় জানান, এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ করোনা আক্রান্তদের ভিটামিন সি প্রয়োগের কোন গাইড লাইন দেয়নি। তবে ভিটামিন সি এর রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রয়েছে। কোন কোন দেশে চিকিৎসকরা ভিটামিন সি করোনা রোগীর দেহে প্রয়োগ করে সফলতা পেয়েছে বলে অনলাইনের বিভিন্ন জার্নালে বেরিয়েছে। লালমনিরহাটে এখনো পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর খবর পাওয়া যায়নি। তাই আমরা কাউকে এখনো করোনার চিকিৎসা দেইনি।
×